‘আলো আসবেই’ গ্রুপ চ্যাট প্রসঙ্গে মুখ খুললেন এডমিন শামীমা তুষ্টি

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত শোবিজ তারকাদের একটি গ্রুপ চ্যাটের স্ক্রিনশট ফাঁস হয়েছে, যা নিয়ে তোলপাড় চলছে দেশে। ‘আলো আসবেই’ নামক সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, সোহানা সাবাকে যাদের অবস্থান ছিল ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষে! তারা মত দেন, যেভাবেই হোক আন্দোলন থামাতে হবে। একটি মেসেজে অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস লেখেন, ছাত্রদের ওপর গরম পানি ঢেলে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।

এদিকে ‘আলো আসবেই’ গ্রুপ চ্যাট ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন শোবিজ অঙ্গনের একাধিক ব্যক্তিত্ব। তবে গ্রুপে জড়িতদের অনেকেই বলেছেন, গ্রুপে যুক্ত থাকলেও চ্যাটের বিষয়ে কিছু জানেন না তারা। আবার অনেকেই রয়েছেন চুপ। বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি।

তিনি আলো আসবে গ্রুপের অ্যাডমিন ছিলেন। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) উপলব্ধি শিরোনামে ফেসবুকে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়েছেন তিনি। সেই পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল -

শামীমা তুষ্টি তার পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি এই মুহূর্তে যা লিখতে যাচ্ছি, আমি জানি, তার জন্য আমি গালি ও ট্রোলের সম্মুখীন হতে পারি। তবুও আমি আমার পজিশন ক্লিয়ার করতে চাই।

আমি প্রথমেই বলে নিতে চাই যে আমি একটা রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী। এটার কারণ আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এবং ১৯৬৫ সালে বাবা মালিবাগ আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ছিলেন, তাই আমার বাড়িতে সবসময় এই পরিবেশই ছিল যেখানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আমি আমার নিজের পক্ষ ভেবেছি। আমার এই পক্ষপাতিত্ব যে ভুল তাও আমি মনে করি না।

আমি মনে করি, আমি আমার অংশগ্রহণ ঠিক বিবেচনা করেই করেছি। কিন্তু এই দলের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও আমার নিজের কিছু বিচার-বিবেচনা আছে।
আপনারা সকলেই জানেন কেউ কোনো দলের কর্মী হিসাবে কাজ করে, তখন তার সেই দলের নেতাদের কথামতো কাজ করতে হয়। সেসব দলীয় নির্দেশনার বিপক্ষে গিয়ে কাজ করার পরিস্থিতি থাকে না। এবং আমি তা করতেও চাই না দলের কর্মী হিসাবে। তাই বলে এই হত্যাকাণ্ড, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এই নৃশংসতার আমি সমর্থক নই। এক মিনিটের জন্যও ছিলাম না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে বহু কর্মীই তা ছিলেন না। আমাদের অনেকেরই পজিশন নেয়া দরকার ছিল। অনেক আগেই দরকার ছিল। আমি জানি, আপনাদের অনেকে এই কথাতেও ক্ষুব্ধ হবেন। কিন্তু আশা করি এটা মানবেন যে, আমরা বাংলাদেশে কী ঘটছে তাও জানতে দেরি করেছি। দলীয় রাজনীতির মধ্যেও খবর ফিল্টার হয়।

যার সন্তান গেছে তার অবস্থা ভেবেছি। প্রতি মুহূর্তে আমি, আমাদের কেউ কেউ, একটা পজিশন নিতে গেছি। সেসব পজিশন কারো না কারো কারণে অন্য আরেকটা পজিশন হয়ে গেছে। আমরা বিটিভিতে গেছি শিল্পীরা সহিংসতা ও ছাত্রদের হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে , করেছেনও, তবে সেটা সংবাদে তেমন করে আসেনি, কিন্তু যা এসেছে তাতে আরও ভুল বোঝার জায়গা তৈরি হয়েছে। তবে যা দেখা গেছে সেটাও ঠিক না তা আমি বলবো না। আমরা হাসপাতালেও আহতদের দেখতে গেছি। আর তখনো আমি সকল কিছু বুঝে উঠতে পেরেছি তেমন না।

আমরা যে যাই ভাবি না কেন, দল মূলত কী কী করতে যাচ্ছে বা কী করবে, তা সম্পূর্ণ জানার উপায় আমাদের ছিল না। আমি এসব কথা বলে পক্ষ-বদলের চেষ্টা করছি না। বরং আমার দলের পক্ষে যেসব মারাত্মক ভুল ছিল আমার যে সব বোঝাবুঝি ছিল সেগুলোর কারণে আমার দোনোমনা আর পরিস্থিতির কথা আপনাদের জানাতে এসেছি। আমি একটা সংগঠন করি যেখানে সিংহভাগই এই হিংস্রতা, এই হত্যার সমর্থক নয়। কিন্তু আমাদের কোনো একটা পজিশন কীভাবে নিতে পারি তা ভাবতে ভাবতেই প্রতিদিন আরও নতুন মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিন আরও বেশি করে আপনাদের থেকে দূরে সরে গেছি।

আমি একটা হোয়াটসএ্যাপ গ্রুপে ছিলাম। সেখানেও আমি বলেছি যে সকলের সাথে গিয়ে আলাপ করতে হবে। এগুলো বন্ধ করা দরকার। কিন্তু ঘটনা এত দ্রুত ঘটছিল আমি যা সমর্থন করি না তা আপনাদের জানানোর সুযোগ পাইনি। তাছাড়া আমার অনেক সহকর্মীরাও এসবের ভিতরে ছিলেন, পরে হয়তো থাকেননি। তারাও আমাকে অনেক গালাগাল করেছেন তবু আমি বলতে চাই যে আমি আমার সহকর্মীদের জন্য অনেক কিছুই করার চেষ্টা করেছি। এখনো তাই করবো। এছাড়াও আমরা আমাদের সিনিয়র সহকর্মীদের সাথেও যোগাযোগ করতে পরিনি এক সঠিক দিক নির্দেশনার জন্য। সেসব ও আমাকে ভাবিয়েছে।

এখনও আপনাদের সামনে এসে কথা বলতে দেরি করেছি। যে ঘৃণার সম্মুখীন আমরা, যে গালাগালি আমি খেতে পারি সেসবের ভয়েই আরও আরও দেরি করে ফেলেছি। কিন্তু আমি নিজেকে বুঝিয়েছি, এইসব সমালোচনা আর গালি আর ট্রোল আমার গ্রহণ করতে হবে। আর সেসবের মধ্য দিয়েই শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে।

আপনারা দয়া করে ভুল বুঝবেন না। আমি দলবদলের ইচ্ছা থেকে আসিনি। আমি যে দলে ছিলাম সেই দলের নেতৃবৃন্দের সকল কার্যক্রম যে আমি সমর্থন করি না সেটা জানাতে এসেছি। আমি জানাতে এসেছি আমি দল করলেও নিজের বিচারবুদ্ধি বিবেক-বিবেচনা বিক্রি দিয়ে আমি দল করি না। আমি অনেক দেরিতে আপনাদের সামনে এসেছি। কিন্তু আমার অনুভূতি নতুন নয়। শুরু থেকেই হচ্ছিল। আমি সত্যি সত্যি ট্রোল-গালির ভয়েই আমি আগে লিখিনি। অনেক ট্রোল আর গালি নেবার মতো মানসিক অবস্থায় ছিলাম না। এখন কিছুটা কিছুটা নিজেকে সংযত করতে পেরেছি। সহ্য করার মতো ধৈর্য আশা করি আমার হবে, আপনাদের সকল কথা নেবার। সেরকম জায়গা থেকেই আমার অবস্থান আমি আপনাদের কাছে পরিষ্কার করলাম। আমি সকলের মঙ্গল কামনা করছি। শহীদদের আত্মত্যাগ যেন বাংলাদেশে বিফলে না যায় সেই প্রত্যাশা করছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর লক্ষ্যে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং সংসদ সদস্য ফেরদৌসের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামের ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়, যাতে আওয়ামীপন্থী শিল্পী ও সাংবাদিকেরা যুক্ত ছিলেন।
এই বিভাগের আরও খবর
রাতেই ঘরে বসে দেখা যাবে ‘তুফান’

রাতেই ঘরে বসে দেখা যাবে ‘তুফান’

ভোরের কাগজ
বিয়ের আগেই অন্ত:সত্ত্বা হয়েছিলেন ‘বাহুবলী’র এই অভিনেত্রী, গর্ভপাতের জন্য চান ৭২ লক্ষ টাকা!

বিয়ের আগেই অন্ত:সত্ত্বা হয়েছিলেন ‘বাহুবলী’র এই অভিনেত্রী, গর্ভপাতের জন্য চান ৭২ লক্ষ টাকা!

জনকণ্ঠ
রোকেয়া প্রাচী ও অরুণা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা

রোকেয়া প্রাচী ও অরুণা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা

মানবজমিন
‘স্কুইড গেম’ কি নকল

‘স্কুইড গেম’ কি নকল

প্রথমআলো
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে মনোনয়ন পাওয়া ৮ অভিনেত্রী

মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে মনোনয়ন পাওয়া ৮ অভিনেত্রী

যুগান্তর
তোমাকে একটি সন্তান উপহার দেব- টেইলর সুইফটকে ইলন মাস্ক

তোমাকে একটি সন্তান উপহার দেব- টেইলর সুইফটকে ইলন মাস্ক

দৈনিক ইত্তেফাক
ট্রেন্ডিং
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে 'বস্তায় বস্তায় ঘুষ' নেওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু

  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া