দেশে ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে মোট চারবার। এ সময় গ্রাহক পর্যায়ে (সর্বনিম্ন ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ ইউনিট ব্যবহার) বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশ। আর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত তা বেড়েছে ১৮৮ শতাংশ। এ সময়ের মধ্যে গত দেড় দশকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে ১৪ বার।
গত দেড় দশকে বিদ্যুৎ খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেলেও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে অভাবনীয় হারে। এর কারণ হিসেবে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রতিযোগিতাহীন বাজার এবং খাতটির অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে দাম বেড়েছে বিদ্যুতের। বিদ্যুৎ খাতে ঋণ ও দায়-দেনা মেটানোর নামে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে তা চাপানো হয়েছে ভোক্তার ওপর। এতে ভোক্তা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সব প্রতিষ্ঠানই ভুক্তভোগী হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে দেশে বিদ্যুৎ খাতে অতিরিক্ত সক্ষমতা বেড়েছে ২৬ হাজার ৫৭৮ মেগাওয়াট। আর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে ১২৫টি। বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ১৫ বছরে অন্তত ১৫ বিলিয়ন ডলার অর্থ বিনিয়োগ করেছে। ২০২১ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত আরো ২৪ বিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এসব বিনিয়োগ পরিকল্পনা ছিল প্রধানত উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি বা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকেন্দ্রিক। বিপুল অংকের এ বিনিয়োগের সঙ্গে মানুষের জীবনমান, মাথাপিছু আয়ের সংগতি না থাকায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে বছরের পর বছর। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের উৎপাদন খাতের সব পণ্যের দাম বেড়েছে, যা সামগ্রিকভাবে মানুষের জীবনমানের ওপর প্রভাব ফেলেছে।
গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি বাড়িয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ওই বছরের জানুয়ারিতে ৫ শতাংশ হারে দুই দফা এবং ফেব্রুয়ারিতে এক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ায় সরকার। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আরেক দফা ৫ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। চলমান প্যাকেজের আওতায় ঋণ দেয়ার সময় সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি থেকে পর্যায়ক্রমে বেরিয়ে আসার শর্ত দিয়েছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
এ লক্ষ্যে প্রতি বছর বিদ্যুতের দাম চারবার বাড়ানোর কথা জানিয়েছিলেন সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। মূল্যবৃদ্ধির এ ধারা আগামী তিন বছর বহাল থাকবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এ মূল্যবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখা হবে কিনা, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগের নয় বছর ক্ষমতায় ছিল বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত। এ সময় এক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। ১০০ ইউনিট ব্যবহারকারী বিদ্যুতের দাম আড়াই টাকা ছিল। এ দাম অপরিবর্তিত ছিল। ৩০১-৪০০ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিদ্যুৎ বিল বাড়ানো হয় ৫ শতাংশ। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৩ টাকা ১৫ পয়সা।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়