ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে কমতে একেবারে তলানিতে

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে কমতে একেবারে তলানিতে নেমে গেছে। শিক্ষার পরিবেশ না থাকা, টিউশন ফি বৃদ্ধি, সেশনজট, বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো অফিস না থাকাসহ নানা অব্যবস্থাপনা এ জন্য দায়ী বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বিদেশী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে আরো নানা সমস্যার কথা।

জানা গেছে, ভর্তি হওয়া বিদেশী শিক্ষার্থীদের অনেকে ভর্তি বাতিল না করেই নিজ দেশে ফিরে গেছেন। বিদেশী শিক্ষার্থী সংক্রান্ত কাজকর্ম পরিচালনার জন্য একটি ফরেন সেল থাকলেও তার কোনো নির্দিষ্ট অফিস নেই, নেই লোকবলও। ফলে শিক্ষার্থীরা কোনো বিষয়ে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে একজনও বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হননি। এছাড়া ২০২১-২২ সেশনে মাত্র তিনজন বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে মাত্র একজন ভর্তি হয়েছিলেন। বর্তমানে অধ্যয়নরত রয়েছেন মোট ২০ জন বিদেশী শিক্ষার্থী।

কয়েকজন বিদেশী শিক্ষার্থীর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নেই। বিশেষত শিক্ষকরা ক্লাস নিতে চান না। বেশীরভাগ দিনই শিক্ষকরা ক্লাসে অনুপস্থিত থাকেন। আবার অনেকে এলেও ক্লাসে যে বিদেশী শিক্ষার্থী রয়েছেন তা মনেই করেন না। বাংলায় পড়িয়ে চলে যান। বিদেশী শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক শিক্ষকই ইংরেজিতে তাদের সঙ্গে যথাযথভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারত থেকে পড়তে আসা এক শিক্ষার্থী জানান, ভর্তির আগে যেসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার শর্ত ছিল সেগুলোর অর্ধেকও তারা পাচ্ছেন না। ওই শিক্ষার্থী জানান, এমনকি সাধারণ ইন্টারনেট সুবিধাও তারা পান না। ফলে নিজ দেশে পরিবারের সঙ্গেও ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারেন না তারা।

ওই শিক্ষার্থী জানান, তিনি  ৪ বছরের ভিসার শর্তে বাংলাদেশে এসেছিলেন। স্বাভাবিক নিয়মে এই সময়ের মধ্যে কোর্স শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু পড়াশোনা শেষ করতে আরো দুবছর লেগে যেতে পারে। ইতোমধ্যে তার ৪ বছর শেষ। এ অবস্থায় ভিসার মেয়াদ বাড়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, তদন্ত না করে ভিসার মেয়াদ বাড়াবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে দূতাবাস।

নেপাল থেকে আসা ইইই বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, স্কলারশিপ নিয়ে ভর্তি হলেও সব ফি দিতে হয়। খরচ বেশি হওয়ায় তিনি এখানে পড়তে আগ্রহ বোধ করছেন না। কিন্তু তিনি নিরুপায়। তিনি জানান, অনেকেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপে চলে যাচ্ছে। এছাড়াও, অনেকেই সুপেয় পানির সংকটের কথা জানান, ক্যান্টিন সমস্যার কথা বলেন অনেকে।

এ প্রতিবেদক বিষয়টি জানতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনে গিয়ে ‘ফরেন সেল’ নামক একটি সেলের কথা জানতে পারেন। সেখানে সকল তথ্য পাওয়া যাবে বলে তাকে জানানো হয়। যদিও অনেকক্ষণ খোঁজ করার পরও ফরেন সেলের কার্যালয়ের হদিস মেলেনি। জানা যায়, সেই সেলে নির্দিষ্ট কোনো লোকবল নেই। অন্য সেল থেকে অনভিজ্ঞ এক কর্মকর্তাকে সেখানে দিয়ে রাখা হয়েছে।

সাহাদাৎ হোসেন নামে ওই কর্মকর্তা জানান, নির্দিষ্ট লোকবল নেই এই সেলে। নেই অফিসও। যে কারণে শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ করতে পারেন না। তিনি বলেন, আমরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করি। ফরেন সেলের কোনো অবদান নেই।

সাহাদাৎ হোসেন অভিযোগ করে জানান, তিনি  দীর্ঘদিন ধরে এই সেলে কাজ করলেও তার জন্য বিশেষ কোনো ভাতা বরাদ্দ নেই। তিনি কাজ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

ফরেন সেলের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. আবু হেনা মোস্তফা জামাল। তিনি জানান, যে অভিযোগগুলো উঠছে তা বেশীরভাগ সত্য। তিনি বলেন,  প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্কলারশিপ দেয়। কিন্তু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। বিদেশী শিক্ষার্থীরা আগ্রহ না হারিয়ে করবে কি? একাডেমিক মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে স্বীকার করেন ড. আবু হেনা মোস্তফা জামাল। তিনি মনে করেন, একাডেমিক পরিবেশ ভালো থাকলে অবশ্যই বিদেশী শিক্ষার্থীরা এখানে আসতো।
এই বিভাগের আরও খবর
টাঙ্গাইলে বিদ্যালয়ে ক্লাস নিলেন উপদেষ্টা

টাঙ্গাইলে বিদ্যালয়ে ক্লাস নিলেন উপদেষ্টা

বাংলা ট্রিবিউন
পেছালো ঢাবির একটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ

পেছালো ঢাবির একটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ

দৈনিক ইত্তেফাক
লক্ষ্মীপুরে সেতু ধসে যাতায়াত বন্ধ চার দিন, বাতিল হলো একটি কলেজের পরীক্ষা

লক্ষ্মীপুরে সেতু ধসে যাতায়াত বন্ধ চার দিন, বাতিল হলো একটি কলেজের পরীক্ষা

প্রথমআলো
হলগুলোতে ছাত্রদলের পোস্টার, মধ্যরাতে ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের মিছিল

হলগুলোতে ছাত্রদলের পোস্টার, মধ্যরাতে ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের মিছিল

সমকাল
ঢাবিতে মুক্তিযুদ্ধের নাতি-নাতনির কোটা বাতিল

ঢাবিতে মুক্তিযুদ্ধের নাতি-নাতনির কোটা বাতিল

ভোরের কাগজ
এনটিআরসিএর ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি আসছে, নিয়োগ হবে এক লাখ শিক্ষক

এনটিআরসিএর ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি আসছে, নিয়োগ হবে এক লাখ শিক্ষক

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস
ট্রেন্ডিং
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে 'বস্তায় বস্তায় ঘুষ' নেওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু

  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া