করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আবারো পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ছে কক্সবাজার। ভিড় নেই সমুদ্রসৈকত, রেস্টুরেন্ট এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পণ্যের দোকান ও স্পটগুলোতে। প্রতি বছর শীত মৌসুমে লাখো পর্যটক ভিড় করলেও এখন প্রায় জনশূন্য। পর্যটনের ভরামৌসুম হলেও ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে রুম বুকিং দেয়া হচ্ছে। তাতেও ৫০ শতাংশ রুমও বুকিং হচ্ছে না।
বিশ্বের দীর্ঘতম ‘সমুদ্রসৈকত’ যার অপরূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ করে যে কাউকে। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। কিন্তু করোনার দাপটের পর এ বছর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়া শুরু করলেও বর্তমানে ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সমুদ্রসৈকত নগরী কক্সবাজার ঘিরে যাদের জীবিকা চলে, তারা পড়েছেন চরম বিপাকে।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলেন, নতুন নির্দেশনার কারণে পর্যটক কম আসছে। অন্য এক ব্যবসায়ী জানান, পর্যটক না থাকলে তো আমাদের ব্যবসা নেই। ওমিক্রনের কারণে মানুষ আতঙ্কিত। অনেকটা ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং যেকোনো মুহূর্তে লকডাউনের ঘোষণা আসতে পারে- এমন আতঙ্কে পর্যটকদের আনাগোনা কমে গেছে। পর্যটন মৌসুমে স্বাভাবিকভাবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়াও সবসময় অন্তত ৫০ শতাংশ রুম বুকিং থাকে। কিন্তু নতুন করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তা ২০ শতাংশে চলে এসেছে। আবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ৭০-৮০ শতাংশ রুম বুকিং থাকে। সে ক্ষেত্রেও ২০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ফলে নতুন করে পর্যটন ব্যবসায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কলাতলী-মেরিনড্রাইভ হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, সরকার আবার কখন লকডাউন দেয় তা নিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে আছে। এ কারণেও অনেকে আসার সাহস করছেন না। একই অবস্থা নামী-দামি হোটেল-রেস্তোরাঁয়ও। বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার রেডি করা হলেও ভোজনরসিক পর্যটকদের আনাগোনা কমে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। এমনকি নতুন করে লকডাউনের ঘোষণা এলে অনেকেই পুঁজি হারিয়ে আবারো পথে বসার উপক্রম হতে পারে- এ আতঙ্কে ছোট পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁর চেয়ারম্যান, আশরাফুল ইসলাম রাকিব জানান, মাত্র ২১ দিন আগে কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁর একটি শাখা খোলা হয়েছে। কোটি টাকা ইনভেস্ট করে এখন শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। করোনা আতঙ্কের পর থেকে বেচাকেনা কমে গেছে।
হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, শুধু করোনার কারণে নয়, বিভিন্ন কারণে পর্যটকদের আনাগোনা কমেছে। করোনার পাশাপাশি এত দিন স্কুল খোলা ছিল, স্কুলের ট্যুরও বন্ধ। এখানে যারা আসেন বেশির ভাগ ফ্যামিলি ট্যুরে আসেন। সে হিসেবে ফ্যামিলির কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে আর আসা হয় না।
তিনি আরো জানান, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। বিশেষ করে যারা আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে লড়েছেন, তারা ভয়ে আসতে চায় না। হোটেল মোটেলে শুক্রবার ৪০ শতাংশ রুম বুকিং ছিল বলেও জানান তিনি।
এ দিকে ওমিক্রনের কারণে আতঙ্ক কাজ করলেও মাস্ক পড়া নিশ্চিত করাসহ সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রতিদিন ৩-৪টি টিম নিয়ে প্রতিনিয়ত হোটেল মোটেল জোনসহ শহরের বিভিন্ন স্পটে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান। তিনি জানান, নিয়মিত অভিযান হিসেবে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে হোটেলগুলোতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনো বিষয়ে অসঙ্গতি পেলে জরিমানাও করা হচ্ছে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়