করোনায়  ১৭শ’ কোটি  মার্কিন ডলারের ক্ষতি: প্রধানমন্ত্রী

করোনা মহামারিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২৯ জুন) ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনা ভাইরাসজনিত কারণে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আনুমানিক এক হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার। এ সময় অর্থনৈতিক অভিঘাত থেকে উত্তরণে আমরা ১৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছি।’

করোনায় বন্ধুপ্রতীম দেশ ও সংস্থাকে বাংলাদেশ পাশে পেয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংগ্রহসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীদের পাশে পেয়েছি। মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ ও প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট সহায়তা ঋণ পেয়েছি। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা আমরা পেতে যাচ্ছি। এর পাশাপাশি টিকা কিনতে ভ্যাকসিন সাপোর্ট বাবদ আরও  ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তার আশ্বাস পেয়েছি। বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সহায়তা পাওয়া সহজ হয়েছে। বাংলাদেশকে বিপুল বৈদেশিক সহায়তা প্রদানের জন্য সকল উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে। মানুষের জীবন-জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট আমরা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো। করোনা মহামারি কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ উন্নয়নের অভিযাত্রায় পুনরায় শামিল হতে পারবো। বাংলাদেশ আরও একধাপ সামনে এগিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘মহামারির সময়েও আমরা অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি। যদিও এর নেতিবাচক প্রভাব আমাদের অর্থনীতির ওপর পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জীবিকার সুযোগ অব্যাহত রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সময়োচিত নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ফলে আমাদের আমদানি-রফতানিসহ অর্থনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। বিভিন্ন সেক্টরে এর প্রভাব দেখা দেয়। এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আমরা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোভিড-১৯ এ সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে আমরা আগেই একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আমরা সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যাংক ব্যবস্থাপনা থেকে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বৃদ্ধি ও বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা আশু করণীয়, স্বল্প মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।আমাদের অন্যতম লক্ষ্য পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া। সব শ্রেণির মানুষ যাতে সুবিধা পায়, সেই ব্যবস্থা করা। সব পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়নের কাজ আমরা গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেছি।’

সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর অত্যন্ত সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলছে। ২৩টি প্যাকেজের  এক লাখ ২৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকার বিপরীতে মে ২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হার ৭১.৫০%। এ পর্যন্ত ৬ কোটি ৫ লাখ ব্যক্তি এবং এক লাখ ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান সরকারের এসব উদ্যোগের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হয়েছে। প্যাকেজ কার্যক্রম থাকায় এই সংখ্যা সামনে আরও বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ৪১ হাজার কোটি টাকা স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে গত মে পর্যন্ত তিন হাজার ২৮৮ হাজার প্রতিষ্ঠানকে ৩২ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। কুটির ও মাঝারি শিল্পের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিলের মধ্যে মে মাস পর্যন্ত ৯৬ হাজার ৬৭৫টি এসএমই প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১৪ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। প্রাপ্তদের মধ্যে নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন ৫ হাজার ২৫৩ জন।’

তিনি জানান, করোনা আক্রান্তদের সেবায় সরাসরি নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের দুই মাসের সমান বেতনের সমাপরিমাণ বিশেষ সম্মানী দেওয়া হয়েছে। এতে ২০ হাজার ৫শ’ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে ১০৪ কোটি টাকা সম্মানী প্রদান করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা সেবায় সরাসরি সম্পৃক্ত বিভিন্ন সেক্টরের কর্মচারীদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী ১৭৩ জনের পরিবারকে ৬৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যিক ব্যাংকে ঋণের বিপরীতে এক হাজার ২৯০ কোটি টাকা সুদ ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে। অতীতে দেশে কখনও সুদ ভর্তুকি দেওয়া হয়নি। এতে ৭২ লাখ ৮০ হাজার ঋণ গ্রহীতা সুবিধা পেয়েছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের সময়োচিত ও সাহসী পদক্ষেপের ফলে এই দুর্যোগের সময় জীবন ও জীবিকা যেমন রক্ষা করা গেছে, তেমনই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। ফলে দেশের অর্থনীতি সার্বিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব সত্ত্বেও সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের ফলে দেশের অর্থনীতি ‍পুর্ণাঙ্গ পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে।’
এই বিভাগের আরও খবর
তুলে নিয়ে কিশোরীকে লঞ্চের কেবিনে ধর্ষণ

তুলে নিয়ে কিশোরীকে লঞ্চের কেবিনে ধর্ষণ

যুগান্তর
আগামী সপ্তাহে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা

আগামী সপ্তাহে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা

বণিক বার্তা
থাইল্যান্ডে সফর দুই দেশের ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা করেছে: প্রধানমন্ত্রী

থাইল্যান্ডে সফর দুই দেশের ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা করেছে: প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন
হবিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৪ জন গলাচিপার

হবিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৪ জন গলাচিপার

নয়া দিগন্ত
চুয়াডাঙ্গায় ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড

চুয়াডাঙ্গায় ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড

মানবজমিন
চুয়াডাঙ্গায় ৪৩.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, ৩৫ বছরে দেশের সর্বোচ্চ

চুয়াডাঙ্গায় ৪৩.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, ৩৫ বছরে দেশের সর্বোচ্চ

জাগোনিউজ২৪
ট্রেন্ডিং
  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া

  • অবিশ্বাস্য কীর্তিতে হাজার রানের ক্লাবে এনামুল বিজয়