কাবুলে নতুন একটি সরকার গঠন নিয়ে তালেবান নেতৃত্ব এবং তালেবান বিরোধী আফগান রাজনীতিকদের পাশাপাশি তৃতীয় যে পক্ষটি তৎপর সেটি হলো পাকিস্তান।
কাবুলে ভবিষ্যৎ সরকারে তালেবানের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দেন-দরবার করতে গত পাঁচদিন ইসলামাবাদে অবস্থান করছেন বিলুপ্ত তালেবান বিরোধী জোট উত্তরাঞ্চলীয় জোটের শীর্ষ সাত আফগান রাজনীতিবিদ।
ইসলামাবাদে অবস্থান করা আফগান রাজনীতিবিদদের মধ্যে দেশটির কিংবদন্তী তাজিক নেতা আহমদ শাহ মাসুদের দুই ভাই, আহমদ জিয়া মাসুদ ও আহমদ ওয়ালি মাসুদ, তালেবানের প্রথম আমলের পূর্ববর্তী আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট বুরহানউদ্দিন রাব্বানির ছেলে সালাহউদ্দিন রাব্বানি, হাজারা নেতা করিম খলিলি ও আফগান পার্লামেন্টের স্পিকার মীর রহমান রহমানি রয়েছেন।
পাকিস্তানে আসা এই আফগান নেতারা অবশ্য বলেছেন তার নিজেদের উদ্যোগে আসেননি, বরং পাকিস্তান সরকারের আমন্ত্রণেই তারা এসেছেন।
পাশাপাশি, ২০০১ সালে তালেবানের প্রথম সরকারের পতন পরবর্তী আফগান সরকারের প্রথম প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও কাতারের দোহায় মীমাংসায় আলোচনা আফগান সরকারের প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর সাথে কাবুলে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে যে কথাবার্তা চলছে তাতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মনসুর আহমদ খানের পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট থাকার স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। বৃহস্পতিবার মনসুর আহমদ খানের সাথে হামিদ কারজাইয়ের একটি বৈঠকও হয়েছে।
লন্ডনে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির বিশ্লেষক ড. আয়েশা সিদ্দিকা বলছেন, আফগানিস্তানে পাকিস্তান যে তাদের পছন্দমত একটি সরকার চাইছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
পাকিস্তানের লক্ষ্য
ড. আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, 'পাকিস্তানের লক্ষ্য খুব স্পষ্ট। তারা কাবুলে এমন একটি সরকার চাইছে যেখানে তালেবানের প্রাধান্য থাকবে। কারণ পাকিস্তান মনে করে তালেবান সবসময় পাকিস্তানের পক্ষে থাকবে এবং আফগানিস্তানে ভারতের প্রভাব তাতে খর্ব হবে।'
পাকিস্তান সবসময় মনে করে, দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য কাবুলে পাকিস্তানবান্ধব সরকারের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তালেবানের পতনের পর আফগানিস্তানে পাকিস্তানের প্রভাব দ্রুত কমে এসেছে। এর বিপরীতে দেশটিতে পাকিস্তানের চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের প্রভাব বেড়েছে।
বিশেষ করে, আশরাফ গনি আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে তার সাথে ভারতের বিশেষ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জেরে পাকিস্তানের সাথে আফগান সরকারের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। পাকিস্তান বিশ্বাস করে, আফগানিস্তানে প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ পেয়ে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী তৎপরতায়, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদে মদদ দিচ্ছে। ভারতের এই তৎপরতায় সহায়তা করেছে কাবুলের আশরাফ গনি সরকার।
তালেবানের কাবুল দখলের পর পাকিস্তান সেই বাস্তবতা বদলানোর মোক্ষম সুযোগ পেয়েছে।
তবে বেশিরভাগ বিশ্লেষক বলছেন, অন্য অনেকের মত পাকিস্তানও চাইছে কাবুলে ভবিষ্যৎ সরকারে তালেবানের প্রাধান্য থাকলেও সরকারে তালেবান ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক পক্ষ এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ পশতুন ছাড়াও আফগানিস্তানের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর – তাজিক, হাজারা, উজবেক – প্রতিনিধিত্ব থাকুক।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়