দেশজুড়ে চলা খাদ্য ও জ্বালানি সংকটের কারণে সৃষ্ট সহিংস বিক্ষোভ মোকাবেলায় শ্রীলংকায় সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে। গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত টানা ৩৬ ঘণ্টা জনগণের চলাচলের ওপর এ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটির পুলিশ বাহিনী। এ সময়ের মধ্যে জরুরি সেবাসংশ্লিষ্ট ছাড়া বাকি সবার জন্য বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে গতকাল থেকেই ঘরের বাইরে বের হতে পারছে না দেশটির সাধারণ মানুষ। খবর বিবিসি।
এর আগে শুক্রবার দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। সেই সময় বলা হয়, জনশৃঙ্খলা রক্ষা ও দেশের মানুষের কাছে জরুরি সেবা ও পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে জরুরি অবস্থা জারি করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশটিতে সেনা মোতায়েন করা হয়। গতকাল সান্ধ্য আইন জারির পর সন্দেহভাজন যে কাউকে গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে বাহিনীটিকে।
গত বৃহস্পতিবার শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনের সামনে শান্তিপূর্ণভাবেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের হটাতে টিয়ার গ্যাসের শেল, জলকামান ও লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। বিক্ষুব্ধ মানুষ সেখানেই গাড়িতে আগুন দেয়, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে। এতে দুই পক্ষেই বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরদিন শুক্রবার পাঁচ ফটোসাংবাদিকসহ অন্তত ৫৩ জনকে গ্রেফতার ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়। পুলিশের ধরপাকড়ের মধ্যে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করে বিক্ষোভকারীরা।
এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশটির পশ্চিম প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তর-দক্ষিণ-মধ্য কলম্বো, নুগেগোদা, মাউন্ট লাভিনিয়া ও কেলানিয়া পুলিশ ডিভিশনে কারফিউ জারি করা হয়েছিল।
দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকার মোট জনসংখ্যা ২ কোটি ২০ লাখ। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এবার সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমে এসেছে তলানিতে, যার কারণে অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রীও আমদানি করতে পারছে না দেশটি। দেখা দিয়েছে জ্বালানি, তেল, খাদ্য ও ওষুধের সংকট। নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারীর কারণে ধস নেমেছে দেশটির প্রধান খাতগুলোর অন্যতম পর্যটনে। কমেছে বৈদেশিক রেমিট্যান্সও। এ দুটি খাতই ছিল দেশটির অর্থনীতির মূল ভিত্তি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূলত সরকারের অব্যবস্থাপনা, সরকার পরিচালনায় ভুল নীতি, বেহিসেবি ঋণ, কর মওকুফ ইত্যাদি কারণে দেশটির অর্থনীতির এ দুর্দশা। এর ওপর শেষ পেরেক ঠুকেছে কভিড-১৯ মহামারী।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে জ্বালানির অভাবে প্রায় এক মাস ধরে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুিবহীন থাকছে শ্রীলংকার শহরগুলো। গ্রামের অবস্থা আরো শোচনীয়। রাস্তাঘাটেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। একই কারণে প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল দেশটির গণপরিবহন ব্যবস্থা। কাগজের অভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে পরীক্ষা, সংকট দেখা দিয়েছে পত্রিকা প্রকাশ করা নিয়েও।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়