জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসে বাড়ছে মাদকের আসর। মাত্র সাড়ে ৭ একরের ছোট ক্যাম্পাসে ২০টিরও বেশি স্পটে নিয়মিত মাদক সেবন চলে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাকের ডগায় এসব ঘটলেও তা থামাতে ব্যর্থ তারা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে মাদকাসক্তদের ‘অভয়াশ্রম’।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিকাল ও সন্ধ্যা ছাড়াও ক্লাসের সময়েও বসছে মাদক সেবনের আসর। হাতের নাগালে সহজেই পাওয়া যায় গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। ফলে দিন দিন বাড়ছে মাদকসেবী শিক্ষার্থীর সংখ্যা। মাদক সেবনের খরচ জোগাতে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধেও জড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এদের হাতে বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সন্ধ্যার পর সায়েন্স ফ্যাকাল্টিতে বসা যায় না। মাদকসেবীরা প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন করে। আশেপাশে গাঁজার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। যেকোনও সময় তারা ঝামেলা করতে পারে, এই আতঙ্কে সেখান থেকে সরে আসতে হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক নৈশপ্রহরীর সঙ্গে কথা বলে মিলেছে এসব তথ্যের সত্যতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা অভিযোগ করেন, রাত ১০টার পরও অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন। আমরা নিষেধ করলেও তারা কথা শোনেন না। সন্ধ্যার পরও বিভিন্ন জায়গায় তারা দল পাকিয়ে বসে, আলো বন্ধ করে দিয়ে মাদকের আসর বসান।
যেসব পয়েন্টে বসে মাদকের আড্ডা
অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্যাম্পাসের ২০টির বেশি স্থানে প্রতিনিয়ত বসছে মাদকের আড্ডা। জবির নতুন ভবনের নিচের গ্যারেজে, অগ্রণী ব্যাংকের পেছনে, কলা ভবনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পেছনে, ভাষা শহীদ রফিক ভবনের ছাদের ওপর, ভিসি ভবনের পেছনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নষ্ট হয়ে পড়ে থাকা বিআরটিসির বাসের ভেতর, ক্যান্টিন, পাটুয়াটুলী গেট, সামাজিক বিজ্ঞান চত্বর, রেভেনাস ক্যান্টিনের পাশে, ছাত্রী হলের পাশের গলি, লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাদে, লোকপ্রশাসন বিভাগের বারান্দায়, রফিক ভবনের পূর্ব পাশে, দ্বিতীয় গেটের সামনে, পোগোজ স্কুল এবং শিক্ষার্থীদের ঘোষিত টিএসসিতে প্রতিদিন বসে মাদকের আড্ডা। সন্ধ্যায় দল বেঁধে এসব জায়গায় গাঁজা ও ইয়াবা সেবন করে মাদক সেবনকারীরা। এমনকি দিনদুপুরে এসব জায়গায় গাঁজা সেবন করতে দেখা গেছে। এছাড়াও ক্লাস চলার সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বীতল বাসগুলোতে গাঁজা সেবনের ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে, ফেনসিডিল ও বিয়ারের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়।
যেভাবে শিক্ষার্থীদের হাতে মাদক আসছে
অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্যাম্পাসের বাইরের এবং ক্যাম্পাসের কয়েকজন ছাত্রের যোগসাজশে মাদকাসক্ত ছাত্রদের হাতে বিভিন্ন ধরনের মাদক পৌঁছে দেওয়া হয়। পরিচিত ক্রেতা ছাড়া সবার কাছে তারা মাদক বিক্রি করেন না। তারা মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করেন ধোলাইখাল, সূত্রাপুর, নয়াবাজার, নবাবপুর রোড, আরমানিটোলা মাঠ, চানখাঁরপুল, কেরানীগঞ্জ, ধূপখোলা মাঠের আশপাশে থাকা বিভিন্ন চক্রের মাধ্যমে।
মাদকসেবীরা জড়াচ্ছেন অপরাধ কর্মকাণ্ডে
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময় মাদকের খরচ জোগাতে অপরাধে জড়ান অনেক শিক্ষার্থী। বিভিন্ন সময়ে চুরি-ছিনতাইয়ে অনেক শিক্ষার্থীর নাম এসেছে। পার্শ্ববর্তী কোতোয়ালি থানায় শতাধিক শিক্ষার্থীর নামের তালিকা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পুলিশবক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে চুরি-ছিনতাইয়ে শিক্ষার্থীদের নাম এসেছে, যারা মাদক সেবনে জড়িত। আমরা সব সময় সজাগ আছি, যেনো এধরনের ঘটনা না ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করে বিষয়গুলো নির্মূল করতে আমরা কাজ করছি।’
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়