প্রবাস থেকে ফিরে নিরুদ্দেশ। পরিবার জানতো নিখোঁজ। খুঁজে না পেয়ে এক সময় ধারণা করতে শুরু করে, মহিন মারা গেছেন। একে একে কেটে যায় তিনটি বছর।
এরপর সেই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিআইবি)। এমন ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায়। উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের চারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মহিন উদ্দিন (৩১)। স্ত্রী-সন্তান বাড়িতে রেখে ২০১৫ সালে ওমানে পাড়ি জমান।
বিদেশে গিয়ে কয়েক বছরের মধ্যে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন তিনি। ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর মহিনের দেশে ফেরার তথ্য পান পরিবারের সদস্যরা। এরপর তার বাবা আব্দুল মতিনসহ পরিবারের লোকজন মহিনকে আনতে বিমানবন্দরে যান। কিন্তু বাবা সেখানে গিয়ে দেখেন ছেলের কোনো হদিস নেই।
এর পর থেকেই ছেলেকে খুঁজতে শুরু করেন বাবা। রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় করেন নিখোঁজের ডায়েরি (জিডি)। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও কোনো হদিস মেলেনি মহিনের। অবস্থা দেখে পরিবারের লোকজন ভেবেছিলো মহিন আর বেঁচে নেই। তারপরও হাল না ছেড়ে বাবা আব্দুল মতিন ছেলের সন্ধানের জন্য একটি আবেদন করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদারের কাছে।
মানবিক বিষয় হওয়ায় পিবিআই প্রধান কুমিল্লা জেলা পিবিআই প্রধান মো. মিজানুর রহমানকে নির্দেশ দেন নিখোঁজ মহিনকে খুঁজে বের করার। দীর্ঘ প্রায় তিন বছর পর অবশেষে সেই মহিন উদ্দিনকে উদ্ধার করেছেন পিবিআই, কুমিল্লার সদস্যরা।
তবে উদ্ধারের পর জানা গেছে ভিন্ন তথ্য। মহিন পিবিআইকে জানিয়েছেন, তিনি নিখোঁজ ছিলেন না; পরকীয়া প্রেমে জড়িতে প্রেমিকার সঙ্গে নিরুদ্দেশ ছিলেন। এরই মধ্যে বিয়ে করে পরকীয়া প্রমিকার সঙ্গে সংসার করছিলেন তিনি। আর ইচ্ছে করেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছেন।
বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন পিবিআই, কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। মঙ্গলবার রাতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকার একটি গার্মেন্টে কর্মরত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। রাতেই তাকে পিবিআই, কুমিল্লা কার্যালয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় মহিনের বাবা, প্রথম স্ত্রী-সন্তান এবং দ্বিতীয় স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্ধার অভিযানে থাকা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, মহিনকে উদ্ধারের পর তার দ্বিতীয় স্ত্রীও আমাদের সঙ্গে স্বেচ্ছায় কুমিল্লায় আসেন। এরপর তাকেসহ মহিনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঢাকায় মহিন এবং তার স্ত্রী একই গার্মেন্টে চাকরি করতেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মহিন উদ্দিন জানিয়েছেন, বিদেশে থাকা অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাহমিদা রহমান মিমির সঙ্গে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। দেশে ফিরে পরিবার থেকে নিরুদ্দেশ হয় মিমিকে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করেন। তার প্রথম স্ত্রী, পুত্র সন্তান এবং বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কারণ হিসেবে মহিন বলেন, দ্বিতীয় বিয়ের লোকলজ্জা ও পরিবার মেনে নেবে না- এই ভয়ে তিনি পরিবার থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়