পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ স্পষ্ট। সামনেই জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) জোটে সরকারের অংশীদার পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ভিন্ন সুর তুলেছে। পার্টির সভাপতি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। অন্যদিকে তার পিতা, দলীয় সহসভাপতি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি বর্তমান সরকারকে ইমরান খানের সরকারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে এই তুলনা করা হয়েছে। এ থেকে কি ইঙ্গিত মেলে? পিপিপি কি তবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে সত্যিই বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে! এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে আরও কয়েকদিন পর। ওদিকে ইমরান খানকে কেন্দ্র করে যে নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়েছে তাতে সরকারের মধ্যে অস্থিরতা ফুটে উঠেছে। যে বাড়িতে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পুলিশ তাকে খুঁজে পায় না, পরক্ষণেই সেই বাড়ি থেকে তিনি ভাষণ দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে সরকারের ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। তিনি বলেছেন, পুলিশ অভিযান চালানোর সময় ইমরান খান প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। যদি তা-ই হয়, ইমরান খান এমন কোনো ব্যক্তি নন, যিনি আরেক বাসায় গিয়ে আশ্রয় নিলে তা অন্য কেউ দেখতে পাবে না। তাকে চিনবে না। আর পুলিশ তা বুঝতে পারবে না। ফলে সরকারের এমন ভাষ্য অনেকটাই হাস্যকর। একে অনেকেই নাটক হিসেবে অভিহিত করছেন। তোশাখানা মামলায় তিনবার অভিযোগ গঠনের দিন উপস্থিত হতে ব্যর্থ হয়েছেন ইমরান খান। এ জন্য তার বিরুদ্ধে আদালত জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। সেই পরোয়ানা কার্যকর করতে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পুলিশের সেই অভিযান ব্যাহত হয়েছে। পুলিশ পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। অন্য দেশগুলোর মতো পুলিশ নৃশংসতা দেখায় নি। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেনি। তাদের বিরুদ্ধে গুলি ছোড়েনি। কাঁদানে গ্যাস ছোড়েনি। পরে পুলিশের একজন এসপি ইমরানের লাহোরের জামান পার্কের বাসায় প্রবেশ করে বেরিয়ে আসেন। জানান তিনি রুমে নেই। নাটক এখানেই শেষ হয়নি। তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে আসার পরই ইমরান খান ভাষণ দিয়েছেন নেতাকর্মী ও দেশবাসীর উদ্দেশে। এতে তিনি প্রতিষ্ঠান, সরকার এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়ার বিরুদ্ধে তিক্ত অভিযোগ এনেছেন। এরই মধ্যে ইমরানের বক্তব্য ও সংবাদ সম্মেলন সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেয় পেমরা। ওদিকে সোমবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত চেয়ে তার আইনজীবীরা আদালতে আবেদন করেন। কিন্তু তাও প্রত্যাখ্যাত হয়। এ অবস্থায় পাকিস্তানের রাজনীতির সমীকরণ কোনদিকে মোড় নিচ্ছে বুঝা খুবই কঠিন।
তার মধ্যে পিপিপি এবং ক্ষমতাসীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)-এর মধ্যে মতবিরোধ তীব্র হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। পিপিপির সহসভাপতি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি আগামী জাতীয় নির্বাচন পিডিএম জোটের অধীনে করার সম্ভাব্যতা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি সোমবার ভেহারিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে পরিষ্কার করেছেন যে, আগামী নির্বাচনে ‘তীর’ প্রতীকে নির্বাচন করবে পিপিপি। তারা পিডিএম জোটের অধীনে নির্বাচন করবেন না। জারদারি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা পিডিএমের কোনো অংশ নই। তবে সরকারের অংশীদার। পাঞ্জাবে আসন্ন প্রাদেশিক নির্বাচনের আগে পিপিপির এই নেতার এমন মন্তব্যকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের রাজনীতিতে তোলপাড় হচ্ছে। পাঞ্জাবে নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী ৩০শে এপ্রিল। পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের সঙ্গেও কোনোরকম আলোচনার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন জারদারি। তিনি ইমরান সম্পর্কে বলেছেন, ইমরান কোনো রাজনীতিক নন। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কি তার সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পরামর্শ হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে জারদারি বলেছেন, এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিষয়। তিনি কেন আমার সঙ্গে পরামর্শ করবেন?
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়