দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যমুনার উত্তাল নৌপথের জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার জামথল খেয়াঘাট ও বগুড়ার সারিয়াকান্দির কালিতলা খেয়াঘাটের মধে ফেরি সার্ভিস চালু হচ্ছে। ১২ আগস্ট ফেরি সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। ফেরি সার্ভিস চালুর খবরে জামালপুর ও বগুড়া জেলার যমুনা নদীর দুই পারের মানুষের মাঝে খুশির বন্যা বইছে।
এই ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে জামালপুরের মাদারগঞ্জ হয়ে উত্তরবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের মানুষের ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কম সময়ে সাশ্রয়ীভাড়ায় যাতায়াত করতে পারবে। যমুনা সেতু হয়ে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতের অনন্ত ৯০ কিলোমিটার পথ কমে আসবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জামালপুর ও বগুড়া জেলার মধ্যে যমুনার নৌপথে ফেরি সার্ভিস চালু করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেন জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। অবশেষে যমুনা পাড়ের দুই জেলার মানুষের সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এই ফেরি সার্ভিস পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে আরো বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে। আপাতত যাত্রী পারাপারের সার্বিক প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ১২ আগস্ট উদ্বোধন উপলক্ষে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ এই নৌপথে চলাচলের জন্য ২০০ আসন বিশিষ্ট শহীদ আব্দুর রউফ সেরনিয়াবাদ সি-ট্রাক নামের একটি লঞ্চ ইতিমধ্যে মাদারগঞ্জের জামথল লঞ্চঘাটে ভিড়িয়েছে। ভরাবর্ষা মৌসুমে দুই ঘাটের মাঝে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার যেতে সময় লাগবে ৪০ মিনিট।
অন্যদিকে শুকনো মৌসুমে দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার যেতে তারচেয়ে কিছুটা সময় বেশি লাগবে। লঞ্চটি এই নৌপথে দিনে চারবার চলাচল করবে। লঞ্চটি চালু হওয়ায় যাত্রীদের ভাড়া ও সময় দুটোই সাশ্রয়ী হবে। নৌকায় চলাচলের চেয়ে অনেকটা ঝুঁকিমুক্তভাবে যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারবেন। এই ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ায় উত্তবঙ্গের যাত্রীদের মাদারগঞ্জ হয়ে ঢাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে যাতায়াতের চাইতে ৯০ কিলোমিটার দূরত্ব ও প্রায় তিন ঘণ্টা সময় কমে আসবে। এতে করে বঙ্গবন্ধু সেতুতে যাত্রী ও যানবাহনের চাপও অনেক কমে আসবে।
দুই ঘাটে যাত্রী ছাড়াও অল্প সংখ্যক ছোট গাড়ি এই লঞ্চে পারাপারের ব্যবস্থা রয়েছে। ১২ আগস্ট সকাল ১০টায় এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর ২০০ যাত্রী নিয়ে বগুড়ার সারিয়াকান্দির কালিতলা ঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা রয়েছে। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর এই ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ার মুহূর্তে যমুনার দুই পাড়ের বিশেষ করে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা ও বগুড়ার সারিয়াকান্দি-সোনাতলা উপজেলাবাসীসহ নৌপথে যাতায়াতকারী দুই জেলার হাজারো মানুষের মধ্যে উল্লাস বিরাজ করছে।
মাদারগঞ্জের জামাথল ঘাটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করবেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য শাহদারা মান্নান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডবিøউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদিক প্রমুখ। এ ছাড়াও মাদারগঞ্জ ও সারিয়াকান্দি উপজেলার ইউএনওসহ দুই জেলার প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম কালের কণ্ঠকে বলেন, উত্তাল যমুনার নৌপথে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের জন্য এই ফেরি সার্ভিস চালুর চেষ্টা করে আসছিলাম প্রায় পাঁচ বছর ধরে। অবশেষে বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ এই নৌপথের নাব্যতা ও নানান সমীক্ষা শেষে ফেরি সার্ভিসে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়। এতে বগুড়া ও জামালপুর জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। আপাতত মাদারগঞ্জের জামথল ঘাট ও সারিয়াকান্দির কালিতলা ঘাটের মধ্যে যাত্রী ও ছোট গাড়ি পারাপারের মধ্য দিয়ে এই ফেরি সার্ভিস চালু হচ্ছে। খুব শিগগির দুই ঘাটে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণসহ বড় যানবাহন বিশেষ করে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ভারি মোটরযান পারাপারের ব্যবস্থা করা হবে। এই লক্ষ্যে এই রুটে বগুড়া-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুই পাড়েই জেলা সদরের সাথে সহজ যোগাযোগের জন্য প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়