কয়েক বছর আগে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার-সংক্রান্ত সাড়া জাগানো নথি পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারসের নাম। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু প্রভাবশালীদের নাম আসে ওই নথিতে। গোপনীয় সে নথি ফাঁসের ঘটনায় প্রভাবশালীদের গদিতে টান পড়ে, যার রেশ এখনো কাটেনি। এরই মধ্যে প্যান্ডোরা পেপারস নামে নতুন এক নথি ফাঁস হয়েছে; যাতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, ধনী ও প্রভাবশালীদের গোপন অর্থ ও লেনদেনের তথ্য ফাঁস হয়েছে। বিশ্বের ৩৫ জন বর্তমান ও সাবেক রাজনৈতিক নেতার নাম এসেছে এ নথিতে। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বাবিস, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার থেকে শুরু করে জর্ডানের রাজা ও কেনিয়ার প্রেসিডেন্টের নাম। রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পরিবার ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
এছাড়া এ তালিকায় রয়েছে বিশ্বের ৯০টি দেশের ৩০০ জন সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী নেতা, সেলিব্রিটি ও রকস্টার। ১০০ জনের বেশি বিলিয়নেয়ারের নামও রয়েছে এ নথিতে। নথির তথ্য অনুযায়ী, নিজেদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও কর ফাঁকির জন্য ওইসব ব্যক্তি করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত পানামা, দুবাই, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া, বেলিজ, সিঙ্গাপুর, মোনাকো, সুইজারল্যান্ড ও ক্যামন আইল্যান্ডের মতো দেশ ও অঞ্চলে অফশোর কোম্পানি খুলে অর্থ সরিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) এ নথি প্রকাশ করেছে। বিশ্বের প্রভাবশালী ১৫০ সংবাদমাধ্যমকে নিয়ে এ অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান, বিবিসি, ডয়চে ভেলেসহ বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলো একযোগে অফশোর কোম্পানির নামে বিদেশে সম্পদ গড়া ওইসব কোম্পানির ১ কোটি ১৯ লাখ নথি বিশ্লেষণ করেছে। এ অনুসন্ধানে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের ৬৫০ জনের বেশি সাংবাদিক। এতে দেখা যাচ্ছে অফশোর কোম্পানির নামে কীভাবে বিদেশের মাটিতে অর্থের পাহাড় গড়েছেন প্রভাবশালীরা। নথিতে আরো রথী-মহারথীর নাম বেরিয়ে আসতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফাঁস হওয়া নথির বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বিন আল হুসাইন যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ থেকে ৭ কোটি পাউন্ড গোপনে একত্র করেছেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আবদুল্লাহ বিদেশে কীভাবে গোপনে ১৫টি বাড়ি কিনেছেন সে তথ্য উঠে এসেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার মালিবু ও লন্ডনের মতো বিভিন্ন শহরে গোপনে বাড়ি কিনেছেন তিনি। এজন্য অত্যন্ত গোপনীয়তায় গড়ে তুলেছেন অনেক ফার্ম। এসব ফার্মের মাধ্যমে অর্থ সরানো হয়েছে।
এছাড়া সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তার স্ত্রীর ৩ লাখ ১২ হাজার পাউন্ড শুল্ক ফাঁকি দেয়ার তথ্য উঠে এসেছে। লন্ডনে অফিস কেনার সময় এ অর্থ ফাঁকি দেন এ দম্পতি। তারা একটি অফশোর কোম্পানি কিনে নেন, যা ওই ভবনের মালিকানায় ছিল।
ফাঁস হওয়া নথিতে রুশ প্রেসিডেন্টের মোনাকোয় গোপনে সম্পদ গড়ার তথ্য উঠে এসেছে। চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বাবিস ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে দুটি বাড়ি কেনার জন্য ১ কোটি ২০ লাখ পাউন্ড অফশোরে বিনিয়োগ করেছেন। যদিও এ অর্থের কোনো হিসাব তিনি দেখাননি তার নির্বাচনী হলফনামায়। এ সপ্তাহ শেষে তিনি ভোটযুদ্ধের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।
গোপন নথিতে দেখা গেছে, এসব প্রভাবশালী ব্যক্তি বিদেশে গোপনে সম্পদের পাহাড় গড়তে ৯৫ হাজার অফশোর কোম্পানি গড়ে তুলেছেন। গোপনে সম্পদ গড়ার এ তালিকায় রয়েছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ও তার পরিবার। নিজ দেশের অর্থ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আলিয়েভ পরিবার ও তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা যুক্তরাজ্যে গোপনে ৫০ কোটির বেশি ডলারের সম্পদ কেনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। পরিবারটি লন্ডনে তাদের একটি সম্পত্তি ব্রিটিশ রাজপরিবারের কাছে বিক্রি করেছে। তাতে তাদের ৪ কোটি ডলারের বেশি অর্থ লাভ হয়েছে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়