সাম্প্রতিক সময়ে নভেল করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরতে শুরু করেছে বিশ্ব। আগামী বছরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রাক-মহামারী পর্যায়ে ফিরিয়ে নেয়াসহ নানা পরিকল্পনা গ্রহণে ব্যস্ত বিশ্বনেতারা। তবে এমন আশা অনেকটাই ফিকে করে দিয়েছে কভিড-১৯-এর নতুন রূপ ওমিক্রন। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম কভিড-১৯-এর ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়। এর পরই বেশ কয়েকটি দেশে তা ছড়িয়ে পড়ে। গবেষকরা বলছেন, কভিডের অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় এটি যথেষ্ট শক্তিশালী ও সংক্রামক। প্রচলিত কভিড টিকাগুলো এ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর তা নিয়ে অস্পষ্ট অবস্থানে আছেন চিকিৎসাবিদরা।
এমন পরিস্থিতি বিশ্বকে পুনরায় ঝুঁকির মুখে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করে সংস্থাটি। ডব্লিউএইচও বলছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দরুন সামগ্রিক বিশ্ব পরিস্থিতি খুব উচ্চঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ঝুঁকির মাত্রা নির্ভর করছে ভ্যারিয়েন্টটি ঠিক কতটা সংক্রামক এবং তা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য কতটা শক্তিশালী তার ওপর। তবে খুব দ্রুতই বড় আকারে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার কথা জানায় ডব্লিউএইচও। খবর সিএনএন ও রয়টার্স।
আগামী সপ্তাহগুলোর মধ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ঠিক কী আকারে ছড়াতে পারে, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার আশা করছে ডব্লিউএইচও। বিবৃতিতে সংস্থাটি উল্লেখ করে, প্রচলিত কভিড টিকাগুলোর কার্যকারিতা ও সংক্রমণ প্রতিরোধক্ষমতা এড়িয়ে চলতে ওমিক্রন কতটা শক্তিশালী তা নির্ণয় করতে আরো গবেষণা প্রয়োজন। তবে অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও এতটুকু আশা করা যায় যে প্রচলিত কভিড ভ্যাকসিনগুলো গুরুতর রোগ ও মৃত্যুঝুঁকি সামান্য হলেও মোকাবেলা করতে সক্ষম।
এ সময় বিশ্বের জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে কভিড-১৯ টিকার প্রয়োগ আরো দ্রুত হারে বৃদ্ধির জন্য সদস্যরাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় ডব্লিউএইচও। বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, সঠিক সময়ে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে একটি ঝুঁকি নেয়া প্রয়োজন।
ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক ট্যাড্রোস অ্যাডহ্যানম গেব্রেইসুস বলেন, ওমিক্রনের উত্থান আমাদের দেখিয়ে দেয় যে পরিস্থিতি কতটা বিপজ্জনক ও অনিশ্চিত ছিল। মহামারী নিয়ে বিশ্বকে নতুন কোনো চুক্তিতে পৌঁছার প্রয়োজনীয়তাও উপলব্ধি করতে সাহায্য করে এ ভ্যারিয়েন্ট। আমাদের বর্তমান ব্যবস্থা দেশগুলোকে অন্যদের এমন একটি বাস্তবতার বিষয়ে সতর্ক করা থেকে বিরত করে, যা অনিবার্যভাবে তার দিকেই পতিত হবে।
এদিকে যুক্তরাজ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের মোকাবেলায় প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের কভিড ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে। গতকাল এক বিবৃতির মাধ্যমে দেশটির জয়েন্ট কমিটি অন ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জেসিভিআই) এ সুপারিশ করে। একই সঙ্গে মারাত্মক রোগ প্রতিরোধহীনতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে কভিড টিকার চতুর্থ ডোজের সুপারিশও করে জেসিভিআই।
বিবৃতিতে জেসিভিআই উল্লেখ করে মারাত্মক রোগ প্রতিরোধহীনতায় আক্রান্ত যেসব রোগী এরই মধ্যে কভিড টিকার প্রাথমিক ডোজসমূহ (তিন ডোজ) সম্পূর্ণ করেছেন তারা একটি বুস্টার ডোজের উপযুক্ত হতে পারেন। তবে বুস্টার ডোজ ও তৃতীয় ডোজের মধ্যে তিন মাস সময় অতিবাহিত হতে হবে, একই সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সর্বোত্তম সময়ের মধ্যে এ ডোজ গ্রহণ করা যেতে পারে।
অন্যদিকে, প্রয়োজনে কভিড টিকার নতুন সংস্করণ উন্নত করতে সম্মত হয়েছে মার্কিন বায়োটেকনোলজি কোম্পানি মডার্না। প্রয়োজন অনুসারে আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে তারা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে বিশেষ টিকা উৎপাদন করতে প্রস্তুত। গতকাল মডার্নার প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা ড. পল বার্টন এমনটা জানান।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়