রক্তের ক্যানসার বা ব্লাড ক্যানসার নানা রকম হতে পারে। যেমন লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, মাল্টিপল মায়েলোমা ইত্যাদি। ব্লাড ক্যানসার শুনলেই আতঙ্ক ভর করে মনে। এটি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। আসুন জেনে নিই এ সম্পর্কে—
কেন হয়
সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই ব্লাড ক্যানসার হতে পারে। তবে রেডিয়েশন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল, কীটনাশক বা পেস্টিসাইড, ভেজাল খাবার, হেয়ার ডাই, লুব্রিকেন্টস, বার্নিশ, কেমোথেরাপি ড্রাগস ও কিছু জেনেটিক অসুখ দায়ী থাকতে পারে। যেকোনো কারণে অস্থিমজ্জার ভেতরের রক্তের মাদার সেলের (স্টেম সেল) মিউটেশন বা অন্য কোনো পরিবর্তন হলে ক্যানসার সেল বা অপরিপক্ব কোষ তৈরি হয়, যা অস্থিমজ্জার ভেতরে অতি দ্রুত বৃদ্ধি হয় ও রক্তে প্রবাহিত হয়।
উপসর্গ কী
রক্তস্বল্পতার জন্য দুর্বলতা, খাবারে অরুচি, বুক ধড়ফড়, পায়ে পানি জমে যাওয়া, ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া। দীর্ঘদিনের জ্বর বা ঘন ঘন জ্বর হওয়া। অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ (দাঁতের গোড়া, প্রস্রাব–পায়খানা ও কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া, মাসিক বেশি হওয়া ইত্যাদি)। গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া, লিভার-প্লীহা বড় হওয়া। হাড়ে ব্যথা, কোমরব্যথা।
কীভাবে নির্ণয় করা হয়
উপসর্গ ও লক্ষণগুলো দেখে সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে রক্তের সিবিসি পরীক্ষা করতে হবে। পরীক্ষায় অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে, যেমন হিমোগ্লোবিন, ডব্লিউবিসি ও প্লাটিলেট কমে যাওয়া অথবা বেড়ে যাওয়া। বোনম্যারো টেস্ট, ফ্লোসাইটোমেট্রি, মলিকুলার সাইটোজেনেটিক টেস্ট ও এনজিএস টেস্ট করে ব্লাড ক্যানসার নির্ণয় করা হয়ে থাকে। লিম্ফোমা নামক ব্লাড ক্যানসারের ক্ষেত্রে গ্ল্যান্ড বা টিস্যু বায়োপসি ও পরে ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি করা লাগে।
চিকিৎসা কী
সাধারণত কেমোথেরাপি, মলিকুলার টার্গেটেড থেরাপি, ইমিউনো থেরাপি ও কিছু ক্ষেত্রে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন (বিএমটি) করে ব্লাড ক্যানসারের চিকিৎসা করা হয়। কী ধরনের ওষুধ বা থেরাপি দিতে হবে এবং ফলাফল কী হবে, তা জানার জন্য লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, মায়েলোমাকে নির্ভুল পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন উপভাগে ভাগ করা হয়।
ব্লাড ক্যানসার কি ভালো হয়
ব্লাড ক্যানসার মানেই মরণব্যাধি নয়। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা নিলে অনেক ব্লাড ক্যানসার ভালো হয় ও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে অ্যাকিউট লিউকেমিয়া খুবই মারাত্মক, যার দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পর্যায় বুঝে কেমোথেরাপি বা শুধু ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করলে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যে ধরনেরই অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (এএলএল) হোক না কেন, চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি। শুধু কেমোথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করলে দুই থেকে আড়াই বছর চিকিৎসা নিতে হয়। ক্রনিক লিউকেমিয়ারও প্রকারভেদ আছে। চিকিৎসার ধরনও ভিন্ন ভিন্ন। ক্রনিক লিউকেমিয়ার রোগী সঠিক চিকিৎসা নিয়ে অনেক দিন ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে। মলিকুলার টার্গেটেড থেরাপি আবিষ্কৃত হওয়ায় ক্যানসার চিকিৎসায় উন্নতি ঘটেছে। ক্রনিক মায়েলোয়েড লিউকেমিয়ায় মলিকুলার টার্গেটেড থেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করলে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা ৮৫ শতাংশের বেশি।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়