ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছেই। প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে নতুন রেকর্ড। সর্বশেষ বুধবার আগের সব রেকর্ড ভেঙে প্রায় পৌনে দুই লাখ শনাক্ত এবং এক হাজার ২৭ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৭২ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে করোনার এই দ্বিতীয় ধাক্কায় পরিস্থিতি চরম উদ্বেগজনক হয়ে উঠলেও দেশজুড়ে পূর্ণ লকডাউন জারির কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের। বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে এক আলোচনায় সরকারের এমন মনোভাবের কথা স্পষ্ট করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
যেসব রাজ্যে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ তারা অবশ্য নিজেদের মতো ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। যেমন মুম্বাইসহ গোটা মহারাষ্ট্রে বুধবার রাত আটটা থেকে প্রায় লকডাউনের মতোই নানা বিধিনিষেধ চালু হয়েছে।
বস্তুত ভারতে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা গত বছরের চেয়েও অনেক বেশি ব্যাপক আকারে ও অনেক দ্রুত গতিতে আঘাত হেনেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে প্রায় প্রতিদিনই আগের রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা।
ভারতে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটি ৪০ লাখেরও বেশি। অর্থাৎ, শনাক্তের সংখ্যায় ব্রাজিলকেও ছাপিয়ে গেছে দেশটি। আক্রান্তদের মধ্যে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ এই মুহুর্তে অ্যাকট্ভি কেস, অর্থাৎ তারা এখনও রোগের সঙ্গে লড়ছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব রাজেশ ভূষণ মেনেই নিয়েছেন পরিস্থিতি সত্যিই দুশ্চিন্তায় ফেলার মতো। তিনি বলেন, আগে একদিনে সর্বোচ্চ বৃদ্ধির যা রেকর্ড ছিল, তা এর মধ্যেই ছাপিয়ে গেছে। এই প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী, রোজই নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। আর প্রতিটা রাজ্যকে আমরা ক্রমাগত সেই কথাটাই বলে চলেছি, তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, ‘এই মুহুর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের ৫৩টি বিশেষজ্ঞ দল দেশের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ৫৩টি জেলায় ক্যাম্প করে আছেন। তারা মহামারি মোকাবিলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
এই মুহুর্তে কোভিড পরিসংখ্যান গত বছরের চেয়েও অনেক খারাপ হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় পর্যায়ে যে দেশব্যাপী লকডাউন জারির কথা ভাবা হচ্ছে না, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাসের সঙ্গে এক ভিডিও বৈঠকে মিস সীতারামন বলেন, ভারত কোভিডের মোকাবিলা করবে টেস্টিং, ট্র্যাকিং, ট্রিটমেন্ট, টিকা আর কোভিড-সম্মত আচরণবিধি পালনে জোর দিয়ে; লকডাউন দিয়ে নয়।
তার ভাষায়, ‘যতই দ্বিতীয় ধাক্কা আসুক, আমাদের স্পষ্ট কথা হচ্ছে, ভারত বড় আকারে কোনও লকডাউনে যাবে না। অর্থনীতির চাকাকে আমরা স্তব্ধ করতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘শনাক্ত রোগীদের আইসোলেশনে রেখে বা আক্রান্ত এলাকা কোয়ারেন্টিন করেই আমরা সেকেন্ড ওয়েভের মোকাবিলা করবো। কোনও লকডাউন জারি করা হবে না।’
মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য, যেখানে দৈনিক ৫৫ থেকে ৬০ হাজারেরও বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে, সেখানে এরইমধ্যে কার্যত লকডাউন শুরু হয়ে গেছে। ফলে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইসহ গোটা রাজ্যেই খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরুনোর পথ বন্ধ হয়ে গেলো। ১৫ দিনের জন্য বন্ধ থাকছে নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়, এমন সব দোকানপাটও। তবে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এই পদক্ষেপকে লকডাউন বলতে রাজি নন। রাজ্যবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘একে বলা যেতে পারে ব্রেক দ্য চেইন, অর্থাৎ কোভিড সংক্রমণের শৃঙ্খলকে ভাঙার চেষ্টা। সেই লক্ষ্যেই আমরা ১৫ দিনের জন্য রাজ্যে লোকজনের মেলামেশা, অপ্রয়োজনীয় সব যাতায়াত এইগুলো বন্ধ করতে চাইছি।’
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়