দেশে শস্য আবাদ কার্যক্রমে তেলবীজের গুরুত্ব তুলনামূলক কম। মোট চাহিদার এক-দশমাংশও দেশে উৎপাদন হয় না। দেশে ভোজ্যতেল উৎপাদন বাড়ানোর পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে তেলবীজের অপর্যাপ্ত সরবরাহ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবাদের ক্ষেত্রে ধাননির্ভর শস্য বিন্যাসের কারণে কৃষকদের কাছে কম গুরুত্ব পাচ্ছে তেলবীজ উৎপাদন। যদিও কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, শুধু দ্বিফসলি আবাদের শস্য বিন্যাস একটু পরিবর্তন করলেই দেশে ভোজ্যতেল উৎপাদন প্রায় সাত গুণ বাড়ানো সম্ভব।
দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২০ লাখ টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র দেড় লাখ টন। এ ঘাটতি পূরণে প্রতি বছর ভোজ্যতেল আমদানি করতে হচ্ছে গড়ে ২০ হাজার কোটি টাকার। সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে দ্বিফসলি জমিগুলোর শস্য বিন্যাসে সরিষার অন্তর্ভুক্তি এ আমদানিনির্ভরতা লাঘবে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
বোরো-পতিত-রোপা আমন বাংলাদেশের একটি প্রধান শস্য বিন্যাস। মোট আবাদযোগ্য জমির প্রায় ২৭ শতাংশে এ বিন্যাসে চাষাবাদ করছেন দেশের কৃষকরা। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, দ্বিফসলি এ শস্য বিন্যাসে নানাভাবে উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে উঁচু ও মধ্যম উঁচু জমির ক্ষেত্রে বিন্যাসে পরিবর্তন আনা হলে দেশে সরিষা উৎপাদন ব্যাপক মাত্রায় বাড়বে। এক্ষেত্রে বোরো ও রোপা আমনের মাঝামাঝি সময়ে তেলবীজ শস্যটি আবাদ করা যায়। এতে দেশে সরিষার বার্ষিক উৎপাদন দাঁড়াবে ২৬ লাখ টনে, যা থেকে তেল উৎপাদন করা যাবে ১০ লাখ ৪০ হাজার টন।
তবে নতুন এ শস্য বিন্যাস কার্যকর করতে হলে বোরোতে আগাম ও উন্নত ফলনশীল জাতের ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয় ব্রি ধান৮৯ ও ব্রি ধান৯২-এর কার্যকারিতার প্রমাণ পেয়েছে। ধানের জাত দুটি আবাদের মাধ্যমে নতুন এ শস্য বিন্যাসের সুফল পাওয়া গিয়েছে। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি কামারপাড়ায় এ পরীক্ষামূলক শস্য বিন্যাসে জাত দুটি ব্যবহার করে সফলতা পাওয়া গিয়েছে।
এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, প্রতি বছর দেশে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়। এতে ব্যয় হয় ১৫-২০ হাজার কোটি টাকা। উন্নত শস্য বিন্যাসে বোরো ও আমনে ব্রি ধান৮৯ ও ব্রি ধান৯২ আবাদ করে পতিত সময়ে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা উৎপাদন করা যাবে। ফলে সরিষা উৎপাদন বাড়বে এবং ভোজ্যতেলে আমদানিনির্ভরতা কমবে। এ জাত ও শস্য বিন্যাস সারা দেশের উপযুক্ত এলাকায় সম্প্রসারণ করা হবে। কৃষিপণ্যের আমদানিনির্ভরতা কমাতে শস্য বিন্যাসের মাধ্যমে আবাদে গুরুত্ব দেয়া হবে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়