ভ্রমণে গেলে পিচঢালা সড়কে হলুদ বা সাদা দাগ তো সবারই নজরে আসে। কিন্তু কখনও কি ভেবেছেন, কেন এই দাগ? নিশ্চয়ই কোনও কারণ রয়েছে, ভেবেই হয়তো যাত্রী হিসেবে এই কৌতূহল নিবারণ করেছেন। কিন্তু একজন চালককে অবশ্যই এ সম্পর্কে জানতে হয়। আসলে তারা কতটুকু অবগত, এ বিষয়ে জানতেই কথা হয় রায়হানুল হক নামে এক চালকের সঙ্গে। প্রায় তিন বছর ধরে গাড়ি চালান তিনি। মহাসড়কে টানা সাদা দাগ থাকলে তার অর্থ কী বোঝায়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এর অর্থ গাড়ি সোজা যাবে।’ শিশির নামে আরেক চালক তাকে থামিয়ে বলেন, ‘আসলে যেখানে ডিভাইডার থাকে না, সেখানে এই লাইন থাকে।’ প্রকৃতপক্ষে দুজনের উত্তরই ভুল। ট্রাফিক নিয়মে এই দাগের অর্থ হলো, চালক গাড়ির লেন পরিবর্তন করতে পারবেন না।
আবার টানা সাদা লাইনের মতোই সড়কে কাটা সাদা লাইনও থাকে। এই লাইনের অর্থ হলো- আপনি লেন পরিবর্তন করতে পারেন, তবে সাবধানে এবং যথাযথ সতর্কতার সঙ্গে। টানা হলুদ লাইন থাকলে অন্য গাড়িকে ওভারটেক করা যাবে। তবে হলুদ লাইনকে ক্রস করা যাবে না। সবসময় হলুদ লাইনের বাম দিকেই থাকতে হবে। এসব নিয়ম আবার দেশভেদে ভিন্ন হয়। রাস্তায় টানা হলুদের মতো যদি কাটা হলুদ লাইন থাকে, তবে অন্য গাড়িকে পাস দেওয়া এবং ওভারটেক করা যাবে।
সাধারণত নিয়মিত গাড়ি চালান না, হুট করে শহর থেকে বেরিয়ে মহাসড়কে যান; এমন চালকদের বেশিরভাগই মনে করতে পারেন না, রাস্তায় দেওয়া সাদা-হলুদ নানা রকমের সংকেতের কোনটার কী মানে। আর নিয়মিত যারা চালান, তারা এই দাগের অর্থ জানলেও মানার প্রয়োজন বোধ করেন না। আর এর ফলে দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। যদিও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মনে করে, লাইসেন্সধারী সবাই এসব সংকেতের মানে জানেন।
যখন লাইসেন্স নেওয়ার পরীক্ষা হয়েছিল, সেখানে সংকেত চেনার পরীক্ষায় পাস করেছিলেন কিনা প্রশ্নে শিশির বলেন, ‘একটা চার্ট ছিল, সেখানে সব সংকেত আঁকা ছিল। একেকটার ওপর আলো ফেলে জানতে চাওয়া হয়েছে তার মানে কী? আমি চারটার মধ্যে তিনটা পেরেছিলাম।’ চারটার মধ্যে একটি পেরেছেন, এমন ব্যক্তিকেও ভারী যানবাহনের অনুমতি পেতে নিজে দেখেছেন বলেও জানালেন তিনি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারান, তাদের মধ্যে ৬৭ শতাংশই অর্থনৈতিক কাজে সক্ষম (১৫-৬৪ বছর বয়সী)। আর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) হিসাবে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এবং এর প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। কেবল নিয়ম মানলে এই বিশাল ক্ষতি অনেকাংশে এড়ানো যায়।
বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের হিসাব বলছে, গত পাঁচ বছরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৪০হাজার মানুষ নিহত এবং ৬০ হাজার জন প্রতিবন্ধী হয়েছেন।
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত গতি ও চালকের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে, রাস্তার নিয়ম জেনেও তা ভাঙার প্রবণতার কারণে ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেলের আধিক্য এবং ছোট যানবাহনের চলাচল বেড়ে যাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা আরও বাড়ছে। মহাসড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ছোট অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের ঘোষণা সরকার দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়