প্রধানমন্ত্রী শেখে হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তাৎপর্য তুলে ধেরে বলেছেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ পাবে, তা পরিবেশবান্ধব হবে। এটা আমাদের দেশের কোনোরকম ক্ষতি করবে না। দেশের মানুষ খুব স্বচ্ছ বিদ্যুৎ পাবে। যে বিদ্যুৎ তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রেখে যাবে। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য অবদান রাখবে।’
বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি বা নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনকাজের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশবাসী বিদ্যূৎ পাবেন কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের কারণে জ্বালানি খাতে কঠোরতা দেখাতে বাধ্য হওয়া সত্ত্বেও সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে। আমাদের যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা এবং করোনাভাইরাসের কারণে মিতব্যয়ী হতে হচ্ছে কারণ আমদানির ক্ষেত্রে পরিবহনব্যবস্থায় মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি চলছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর আমি আবার এ ব্যাপারে উদ্যাগ নিই। সে সময় আমি রাশিয়ায় যাই। সেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যাপারে আলোচনা করি এবং এ নিয়ে আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করে আসি। তখন পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্টে সর্বাধিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টা আলোচনা হয় এবং এ নিয়ে কয়েক দফা মিটিং হয়। তারপর ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর আমরা প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করি।’
রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমি আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে আমাদের দেশের যারা এ বিদ্যুৎকেন্দ্র দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, তাদের সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। এবং ধন্যবাদ জানাই পাবনার ঈশ্বরদীর জনগণকে কারণ তাদের কাছ থেকে আমরা সহযোগিতা পেয়েছি।’
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ কথা মনে রাখতে হবে নিউক্লিয়ার পাওয়ার শক্তি ও এর ব্যবহারটা শান্তির জন্য, উন্নয়নের জন্য। বিশ্বের বুকে সেই দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ আজ স্থাপন করেছে। আমাদের দেশের সব রকম নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আমরা এটা করে যাচ্ছি। এই প্রকল্পের জন্য নদী শাসন থেকে শুরু করে সব রকম যন্ত্রপাতি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার কাজ অত্যন্ত সূচারুরূপে সম্পন্ন করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের এই অঞ্চলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে এখানে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। একটা পশ্চিম পাকিস্তানে, একটা আমাদের দেশে। জমিও ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলো আমাদের অঞ্চলে আর নির্মাণ করেনি পাকিস্তানি শাসকরা। বরং দুটিই তারা নিজ দেশে নিয়ে যায়। ফলে আমরা পূর্ব বাংলার মানুষ বঞ্চিত হই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা দেশের টাকা দিয়ে সমস্ত গ্যাস ফিল্ড ক্রয় করেন। ওই সময় আমাদের যখন দুরবস্থা, সেই সময়ও তিনি ভোলেননি যে এই সম্পদ বাংলাদেশের মানুষের সম্পদ। আমাদের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদসহ সব সম্পদ স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য নিশ্চিত করে দিয়ে যান। রাষ্ট্রের মালিকানা নিশ্চিত করেন। সংবিধানের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষকে বিদ্যুৎ দেওয়াও জীবনমান উন্নত করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেন। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণেও আলোচনাও করেছেন। কিন্তু তিনি তা শেষ করে যেতে পারেননি।’
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়