সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ তার বাসভবনে গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের আজ (সোমবার) দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগ করতে হবে। এছাড়া সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ (লিজা) ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তার জায়গায় নতুন প্রাধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
ক্যাম্পাস বন্ধের বিষয়ে শাবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, বন্ধের বিষয়ে আজকে আমাদের একটা মিটিং হওয়ার কথা ছিল। যেহেতু দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েরও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনার এ চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমরা সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছি। চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা কঠিন। সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার এখন আর সে পরিবেশ নেই। এজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। আজ (সোমবার) দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা চাই, চলমান এ পরিস্থিতিতে সবাই নিরাপদে থাকুক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে গণমাধ্যমে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম আবার নতুন করে শুরু করব। এ মুহূর্তে সবার নিরাপত্তার স্বার্থে সিন্ডিকেট মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর আগে বিকালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ভবনের বাইরে অবস্থান নিয়ে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি আদায়ে স্লোগান দেন সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন সহপাঠীরাও। উপাচার্য তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়লে তার সঙ্গে থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে আশ্রয় নেন। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ওই ভবনের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে স্লোগান দিতে শুরু করেন। বিকাল ৪টার দিকে সেখানে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ উপাচার্যকে মুক্ত করতে ভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাধা দেন। তখন বাগিবতণ্ডার একপর্যায়ে পুলিশ ২৭টি রাবার বুলেট ও ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে নিয়ে আসে। এ সময় অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী এবং কয়েকজন শিক্ষক ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন করছেন হলের কয়েক শতাধিক ছাত্রী। এরই অংশ হিসেবে সকাল পৌনে ৯টার দিকে ছাত্রীরা তিন দফা দাবিতে গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়