সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার সরকারি উদ্যোগ নিয়ে বৈঠক ডেকেও তা স্থগিত করেছে কওমি মাদ্রাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা আল- হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে আগামী সোমবার (২৮ জুন) হাইয়াতুল উলইয়ার স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ দিন থেকে লকডাউন শুরু হওয়ায় বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে হাইআতুল উলইয়ার স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সহ-সভাপতি মাওলানা মুসলেহুদ্দীন গহরপুরী বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে যে ‘অফিস আদেশ’ এসেছে এ বিষয়ে সোমবার আমাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন থেকে লকডাউন শুরু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের সদস্যরা আসতে অসুবিধায় পড়তে পারেন। সে বিবেচনায় এটি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডাকা একটি বৈঠকে যোগ দেননি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের নীতিনির্ধারকরা। বৈঠকে যোগ না দেওয়ার কারণ হিসেবে সময় স্বল্পতা ও সভার আলোচ্যবিষয় কওমি মাদ্রাসার ২০১৮ এর আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (২৫ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত বুধবার (২৩ জুন) রাতে মন্ত্রণালয়ের সভায় যোগদানের অপারগতা জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে অবহিত করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের ডাকা বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে কওমি মাদ্রাসা খোলার বিষয় ছিল না। অথচ আল-হাইআতুল উলয়ার পক্ষ থেকে এ বিষযে সরকারের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে বারবার আলোচনা করা হচ্ছিল। মাদ্রাসা খোলার বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে থাকা সময়ের অন্যতম দাবি ছিল।
এছাড়াও ‘সভার নোটিশ’-এর আলোচ্য বিষয় এবং ‘অফিস আদেশটি’ আইন, ২০১৮ এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সভার আলোচ্যবিষয় সম্পর্কে আল-হাইআতুল উলয়ার স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা হওয়া জরুরি। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে তা সম্ভব ছিল না।
বৃহস্পতিবার বেফাকের কার্যালয়ে আল-হাইআতুল উলয়ার স্থায়ী কমিটির ঢাকাস্থ সদস্যরা এবং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই সোমবারের (২৮ জুন) বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আল-হাইআতুল উলয়ার চেয়ারম্যান এবং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান।
এতে উপস্থিত ছিলেন হেফাজত মহাসচিব মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর, মুফতি আরশাদ রাহমানী, মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমূদ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মুফতি নূরুল আমীন, মুফতি মিজানুর রহমান সাইদ, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ ফরিদী, মাওলানা মনীরুজ্জামান, বেফাকের মহাপরিচালক মাওলানা মুহাম্মাদ যুবায়ের।
প্রসঙ্গত, দেশের কওমি মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা কার্যকর করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে মাদ্রাসাগুলোকে সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আনতে একটি নীতিমালাও প্রণয়নের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আসছে কওমি মাদ্রাসাগুলো।
গত ২১ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের এক অফিস আদেশে এ সংক্রান্ত ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমানকে আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক মো. আব্দুস সেলিমকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
গঠিত এ কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে— কওমি মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা কার্যকরকরণ ও সরকারের নিবন্ধনের আওতায় আনয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
পাশাপাশি কওমি মাদ্রাসা আলাদাভাবে পরিচালিত ছয় বোর্ডকে সমন্বয় করে একটি কওমি শিক্ষা বোর্ড গঠনের প্রস্তাব প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়