বাংলাদেশের শ্রমবাজার অক্ষুণ্ন রাখা, অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুসংহত করাসহ বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র কাজে লাগাতে আজ সোমবার সন্ধ্যায় ৫ দিনের সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে তিনি সেখানে যাচ্ছেন। সফরকালে আলোচনার মধ্য দিয়ে দুবাইয়ের সঙ্গে চলমান সম্পর্ককে আরো মজবুত করতে চায় ঢাকা।
এর আগে গতকাল ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সফরের খুঁটিনাটি জানাতে গিয়ে বলেন, এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সফরকালে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ (আইসিটি) টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হবে। তবে সফরের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী রাস আল খাইমাতে বাংলাদেশি কমিউনিটি স্কুল ‘বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল’-এর নতুন ক্যাম্পাসে নির্মিতব্য ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, এমনিতেই দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। তারা আমাদের খুব সম্মান করে। আন্তর্জাতিক নানা ফোরামে আমরা একসঙ্গে কাজ করি। তিনি বলেন, গেল করোনার সময় নানা দেশের শ্রমিকদের ফেরত পাঠাতে থাকে দুবাই। কিন্তু তারা বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত পাঠায়নি। উপরন্তু বাংলাদেশ থেকে আরো শ্রমিক নিয়েছে। ঢাকা-দুবাইয়ের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক থাকার কারণেই এসব সম্ভব হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের একটি বড় শ্রমবাজার হলো মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে এই একটি দেশ থেকেই বাংলাদেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, তা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত অর্থবছরে এই করোনার সময়েই বাংলাদেশ থেকে প্রায় ত্রিশ হাজার শ্রমিক সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছে। আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরো বাড়বে। সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও সে মোতাবেক কর্মযজ্ঞে আমাদের দেশের শ্রমবাজারের জন্য অনন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে।
করোনার মধ্যেও দেশটিতে শ্রমিক পাঠানোর বিষয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এই করোনাকালেও আমাদের জন্য তাদের শ্রমবাজার আংশিক খুলে দিয়েছে, যা আমাদের একটি কূটনৈতিক সাফল্য। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক আরো জোরালো করতে দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মাঝে জয়েন্ট বিজনেস ফোরামের আয়োজন করা হবে, যা আমাদের ব্যবসাবাণিজ্যের জন্য খুবই লাভজনক হবে বলে আমি মনে করি। সৃষ্টি হতে পারে বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র।
পতেঙ্গা সি বিচ উন্নয়নে ঢাকার কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল দুবাই। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সফরে কোনো অগ্রগতি হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পতেঙ্গা সি বিচের উন্নয়ন বাংলাদেশ সরকার নিজেই করবে। পাশাপাশি তিনটি বে-টার্মিনাল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে একটি বে-টার্মিনালের উন্নয়নে দুবাই কাজ করবে বলে বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরে দেশটির সঙ্গে কোনো এমওইউ স্বাক্ষর হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করতে চায় বাংলাদেশ। তবে কোন বিষয়গুলোতে এমওইউ করা হবে, সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আমাদের মোট আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। তবে বাণিজ্য ঘাটতি এখনো দেড় বিলিয়ন ডলারের মতো। এর মূল কারণ আমরা তাদের কাছ থেকে শুধু জ্বালানি তেল আমদানি করি। রপ্তানির পরিমাণ আরো বাড়ানোর জন্য এই সফরে গুরুত্বারোপ করা হবে। সেজন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সরাসরি শিপিং সার্ভিস চালু নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়