অনেক আগে থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে চায় তুরস্ক। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনিহায় সেই আগ্রহে প্রায়ই ভাটা পড়ে। তবে এবার আবারও জোটটিতে প্রবেশে উঠে পড়ে লেগেছে আংকারা। সম্প্রতি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনায় বিষয়টি তুলে ধরেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান।
জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, ওই ফোনালাপে ইইউ-র সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে পূর্ণ সদস্য হবার প্রক্রিয়া চাঙ্গা করার কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। যদিও ইইউর সদস্য গ্রিসের সঙ্গে উত্তেজনা তুঙ্গে রয়েছে তুরস্কের। তা সত্ত্বেও তিনি এখন এই জোটে ঢুকতে চান। মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার সময় তিনি ‘নিবিড় সংলাপ'-এর মাধ্যমে ইউরোপীয় রাষ্ট্রজোটের অংশ হবার প্রক্রিয়া চাঙ্গা করার আশা প্রকাশ করেন। আপাতত ইইউ-র সঙ্গে সংলাপের প্রক্রিয়া নতুন করে চালু করে শুল্ক ইউনিয়ন কাঠামো আরও জোরদার করতে চান এরদোগান। সেইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণ সদস্য হিসেবে যোগদান সংক্রান্ত আলোচনাও নতুন করে শুরু করতে চান তিনি।
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে তুরস্কের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। ন্যাটোর সদস্য হওয়া সত্ত্বেও সে দেশ পশ্চিমা বিশ্বের মতো রাশিয়ার উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা চাপায় নি।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান বঞ্চ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সংলাপ ও সহযোগিতার পথ খোলা রেখেছেন। ফলে রাশিয়ার সরকার ও সাধারণ মানুষও তুরস্কের উপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এদিকে সামরিক জোট ন্যাটোতে যুক্ত হতে চায় ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। কিন্তু তুরস্ক সেই অনুমোদন দিতে চাচ্ছে না। দেশ দুটি তুরস্কের নানা দাবি মেনে নিলেও এখনও তাদের ন্যাটোর সদস্য হবার পথে বাধা পুরোপুরি দূর করেন নি এরদোগান। এখন তিনি নিজেই আবার ইইউতে প্রবেশের আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এরদোগানের নেতৃত্বে থাকা তুরস্কের এমন ভূমিকা ন্যাটো তথা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য চরম অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনই প্রেক্ষাপটে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ইইউ-র সদস্য হবার বিষয়টি নতুন করে উত্থাপন করলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদানের প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও সেই লক্ষ্যে আলোচনা বেশ কিছুকাল কার্যত বন্ধ রয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে সংলাপ শুরু হলেও ২০১৬ সালে তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর মানবাধিকার পরিস্থিতি ও আইনের শাসনের অবনতির সমালোচনা করে আসছে ইইউ। গত মাসেই ব্রাসেলস ইইউ-র সদস্য হওয়ার পথে তুরস্কের অগ্রগতির অভাবের উল্লেখ করেছে৷ তুরস্কের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা সম্পর্কে গভীর মতবিরোধ রয়েছে বলে ইইউ জানিয়েছে।
যদিও এরদোগানের বিতর্কিত ভূমিকা সত্ত্বেও তুরস্ককে পুরোপুরি উপেক্ষা করা পশ্চিমা জগতের পক্ষে সম্ভব নয়। জার্মান চ্যান্সেলর শলৎসও তার সঙ্গে সংলাপের পথ খোলা রাখতে চান। গ্রিসের সঙ্গে তুরস্কের বিরোধের ক্ষেত্রে মঙ্গলবার এরদোগান নাকি জার্মান চ্যান্সেলরকে ‘নিরপেক্ষ' থাকার দাবি করেছেন। তুরস্কের সরকারি সূত্রে এমনটাই দাবি করা হচ্ছে। জার্মানির সরকারি মুখপাত্র স্টেফেন হেবেস্ট্রাইট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গ্রিসের প্রতি তুরস্কের দাবি নিয়ে কোনো কথা হয় নি। তার সূত্র অনুযায়ী, শলৎস ও এরদোগান শুধু আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেইসঙ্গে রাশিয়া যেভাবে বার বার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়ে চলেছে, সেই পদক্ষেপকে দায়িত্বজ্ঞানহীন হিসেবে বর্ণনা করেছেন দুই নেতা।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়