সুদানী কর্তৃপক্ষ গ্রেফতারকৃত আল জাজিরা টেলিভিশনের খার্তুম ব্যুরো প্রধানকে মঙ্গলবার মুক্তি দিয়েছে। কাতার-ভিত্তিক নেটওয়ার্কের এ সাংবাদিককে নিরাপত্তা বাহিনী তার বাড়ি থেকে দুই দিন আগে গ্রেফতার করেছিল।
তিন সপ্তাহ আগে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সর্বশেষ ঘটনায় আল-মুসালামি আল-কাব্বাশিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদিকে, বেসামরিক শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে শনিবার কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসে।
আল জাজিরা জানায়, সুদানী নাগরিক কাব্বাশি মঙ্গলবার মুক্তি পেয়েছেন। সামরিক বাহিনী এখনো তাকে আটক করার কোনো কারণ জানায়নি।
সশস্ত্র বাহিনীর সংবাদপত্রের প্রধান সম্পাদক ইব্রাহিম আল-হোরি অভিযোগ করেছেন যে আল জাজিরা বস্তুনিষ্ঠ নয় এমন প্রতিবেদন ও পুরানো ভিডিও প্রকাশ করেছে।
আল জাজিরা অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভের খবর গুরুত্বের সাথে প্রচার করেছে। তবে, তারা শীর্ষ জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের একটি বিশদ সাক্ষাৎকারও প্রচার করেছে।
আল জাজিরা সোমবার রাতে জানায়, কাবাশিকে মুক্তি দেয়ার জন্য প্রসিকিউটরের আদেশ সত্ত্বেও তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। অভ্যুত্থানের পর থেকে বিভিন্ন ঘটনায় বিচারিক সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করা হয়েছে।
আইনজীবী এনাম আত্তিক এএফপিকে বলেন, প্রসিকিউটররা শনিবারের সমাবেশকালে গ্রেফতারকৃত ৫০ জনকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাদেরকে একটি অজানা স্থানে নিয়ে গেছে।
এছাড়াও, গত সপ্তাহে ইন্টারনেট চালু রাখার জন্য আদালতের আদেশ সত্ত্বেও সুদানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
গত ২৫ অক্টোবর বুরহান জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত এবং বেসামরিক নেতৃত্বকে আটক করেছে।
বাসস
এর আগে আল কাব্বাশির গ্রেফতারির প্রতিবাদে রোববার আলজাজিরা এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আলজাজিরা সামরিক বাহিনীর হীন পদক্ষেপের কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে এবং আল কাব্বাশিকে অবিলম্বে ছেড়ে দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান করছে। সাথে সাথে প্রতিষ্ঠানটির সকল সাংবাদিককে কোনো প্রকার ভীতি বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও স্বাধীনভাবে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের অনুমতির দাবি জানাচ্ছে।’
এতে আরো বলা হয়, ‘সংস্থাটি সুদানের সামরিক কর্তৃপক্ষকে তার সকল কর্মীর নিরাপত্তার জন্য দায়বদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিশ্বে যখন সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর হুমকি বাড়ছে, তখন এই ঘটনাকে সম্পূর্ণভাবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে বিবেচনা করছে আলজাজিরা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও সংবাদ সংস্থাগুলোর কাছে সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় এর নিন্দার আহ্বান জানাচ্ছে।’
সুদানের সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্বের অংশীদারমূলক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সভরেইন কাউন্সিলের উভয়পক্ষের মতবিরোধের জেরে প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ হামদুকসহ বিপুল বেসামরিক নেতৃত্বকে ২৫ অক্টোবর সামরিক বাহিনী গ্রেফতার করে এবং সামরিক প্রধান জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল-বুরহান ক্ষমতা দখল করেন।
সামরিক বাহিনীর এই পদক্ষেপকে 'অভ্যুত্থান' হিসেবে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সুদানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
তবে জেনারেল বুরহান তার এই পদক্ষেপকে অভ্যুত্থানের বদলে 'গণতান্ত্রিক উত্তরণকে শোধরানোর' পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করছেন।
সামরিক অভ্যুত্থানের জেরে বিশ্বজুড়ে সুদানে সামরিক বাহিনীর নিন্দা জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংক দেশটিতে প্রদত্ত সহায়তা স্থগিত করে। এছাড়া আফ্রিকান ইউনিয়ন সুদানের সংস্থাটিতে সদস্য পদ স্থগিত করে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন শাসন পরিচালনায় নিজের নেতৃত্বে নতুন সভরেইন কাউন্সিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন জেনারেল বুরহান। নতুন নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে এই কাউন্সিল শাসন পরিচালনা করবে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়