২৪ নম্বর ফিফা র্যাংকিংধারী ও ‘সামুরাই ব্লু’খ্যাত জাপানের সামনে ছিল ইতিহাস গড়ার। অন্যদিকে ১২ নম্বর ফিফা র্যাংকিংধারী ও ‘চেকার্ড ওনেস’খ্যাত ক্রোয়েশিয়ার ছিল সামনে এগিয়ে যাবার তাড়না। চলমান কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে সূর্যোদয়ের দেশ বনাম ইউরোপের দেশের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হেসেছে ক্রোয়েশিয়াই।
সোমবার আল ওয়াকরাহ্র আল জানৌব স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ে তারা টাইব্রেকারে ৩-১ গোলে জাপানকে হারিয়ে শেষ আটে যাবার যোগ্যতা অর্জন করে। নির্ধারিত ৯০ মিনিট এবং অতিরিক্ত আরও ৩০ মিনিটেও দু’দলের খেলার ফল নিষ্পত্তি হয়নি, ড্র হয় ১-১ গোলে। ম্যাচের প্রথমার্ধে জাপান এগিয়েছিল ১-০ গোলে।
টাইব্রেকার নামের ভাগ্যপরীক্ষায় জয়ের নায়ক ক্রোয়াট গোলরক্ষক ডোমিনিক লিভাকোভিচ। তিনি জাপানের তিনটি টাইব্রেকার শট (তাকামুই মিনামিনো, কাউরু মিতোমা এবং মায়া ইয়োশিদা) দারুণ দক্ষতার সঙ্গে ফিরিয়ে দেন। তবে তাকুমা আসানোর শটটি ফেরাতে পারেননি। এদিকে জাপানের গোলরক্ষক সুশি গোন্ডার ভাগ্য সহায় ছিল না। তিনি ফেরাতে পারেননি ক্রোয়েশিয়ার চারটি শটের তিনটিই (নিকোলা ভøাসিচ, মার্সেলো ব্রোজোভিচ এবং মারিও পাসালিচ)। তবে ফিরিয়ে দেন একটি শট (মার্কো লিভাজা)। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। জয় নিশ্চিত হওয়ার পর বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে মেতে ওঠে ক্রোয়েশিয়া, আর হতাশায় ভেঙ্গে পড়ে জাপান।
দু’দল এ পর্যন্ত (১৯৯৭-২০২২) পরস্পরের মুখোমুখি হলো চারবার। জয়ের পাল্লায় ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ক্রোয়েশিয়া। অপর ম্যাচটি ড্র হয়। এর আগে বিশ্বকাপে উভয় দল পরস্পরকে মোকাবিলা করেছিল একবারই। ১৯৯৮ আসরে গ্রুপ পর্বের ওই ম্যাচে জাপানকে ১-০ গোলে হারের স্বাদ দিয়েছিল ক্রোয়েটরা। সোমবার ম্যাচে জিতে দীর্ঘ দুই যুগ পর প্রতিশোধ নেয়া হলো না জাপানের!
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোল করার সুযোগ নষ্ট করে জাপান। ওয়াতারু এনদো ক্রস করেন। বক্সের মধ্যে ডিফেন্ডার শোগো তানিগুচির হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৯ মিনিটে গোলের সুযোগ হারায় ক্রোয়েশিয়াও। তোমিয়াসুর ভুলে বল চলে যায় পেরিসিচের কাছে। কিন্তু ভালো পজিশনে থেকেও গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি। ১৩ মিনিটে ডি-বক্সে জাপানের জুনিয়া ইতোর বাড়ানো বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন ফরোয়ার্ড দাইজেন মায়েদা। ৪০ মিনিটে দাইচি কামাদার শট গোলপোস্টের সামান্য ওপর দিয়ে গেলে আবারো হতাশায় পোড়ে জাপান।
৪৩ মিনিটে অবশেষে গোলের সন্ধান পায় জাপান। কর্নার পায় তারা। সরাসরি কর্নার কিক না করে ছোট পাস পেয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ক্রস বাড়ান দোয়ান। ইয়োশিদার হেড থেকে বল চলে যায় মায়েদার কাছে। এই ক্রস বিপদমুক্ত করতে পারেননি করতে পারেননি ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা। চমৎকার মাপা শটে জাপানকে এগিয়ে দিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে উল্লাসে মেতে ওঠেন দাইজেন মায়েদা (১-০)।
প্রধমার্ধে গোল হজম করলেও সমানতালেই খেলে গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া। তবে বল নিয়ন্ত্রণে ক্রোয়েশিয়াই ছিল এগিয়ে ৫৮ শতাংশ (ম্যাচশেষে বল নিয়ন্ত্রণে ক্রোয়েশিয়াই ছিল এগিয়ে ৬০ শতাংশ)।
৫৫ মিনিটে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। ডিয়ান লোভরেনের উঁচু ক্রস থেকে বক্সের ভেতরে জটলার মধ্যে লাফিয়ে ওঠে চমৎকার মাপা-জোরালো হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ফরোয়ার্ড ইভান পেরিসিচ (১-১)। এরপর দু’দলই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করে খেলে। কিন্তু কোনো দলই আর গোল করতে পারেনি।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হলে কিছুক্ষণ বিরতির পর তারপর শুরু হয় অতিরিক্ত সময়ের (১৫+১৫ মিনিট) খেলা। কিন্তু সেখানেও একই স্কোরলাইন বজায় থাকলে খেলা শেষ পর্যন্ত গড়ায় টাইব্রেকারে।
‘ই’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে জাপান উঠে আসে এবারের দ্বাবিংশতম আসরের নকআউট স্টেজে। চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে ২-১ এবং ২০১০ আসরের চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে ২-১ গোলে হারায়। তবে কোস্টারিকার কাছে ০-১ গোলে হেরে যায়। তারপরও ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নাম লেখায় শেষ ষোলোতে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়