জয় বাংলা কনসার্ট: চেতনা আর গানে তারুণ্যের জোয়ার

৭ মার্চ; কেবল একটি তারিখ নয়, এ দেশের জন্ম ইতিহাসের সঙ্গে মিশে থাকা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৭১ সালের এই দিনেই ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দিয়েছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ডাক। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বীর বাঙালি রক্ত আর লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে এনেছে মহান বিজয়।

স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেছে বটে। কিন্তু এখনও সেই ৭ মার্চের ভাষণ সমানভাবে প্রকম্পিত করে বাঙালির হৃদয়। বুকের ভেতর জাগিয়ে তোলে দেশপ্রেমের চেতনা। এই চেতনাকে ধারণ করা এবং নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতেই প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় ‘জয় বাংলা কনসার্ট’।

২০১৫ সাল থেকেই ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে এটি হয়ে আসছে। তবে মাঝে দুই বছর করোনা মহামারির কারণে অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়। দু’বছর পর যেন দ্বিগুণ আনন্দ-উচ্ছ্বাস নিয়ে ফিরেছে এবারের ‘জয় বাংলা কনসার্ট’। বুধবার (৮ মার্চ) আর্মি স্টেডিয়ামে যেন তারুণ্যের জোয়ার এসেছিলো।

বিশাল এই কনসার্ট শুরু হয় শোকার্ত স্মরণের মধ্য দিয়ে। সম্প্রতি ঢাকার সিদ্দিক বাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। অনুষ্ঠান শুরুতে তাই তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বিকাল ৩টার দিকে কনসার্টের প্রথম ব্যান্ড ‘আরেকটা রক ব্যান্ড’ মঞ্চে ওঠে। কালজয়ী গান ‘আমারই দেশ সব মানুষের’ কাভারের মধ্য দিয়ে তারা পরিবেশনা শুরু করেন। এরপর শোনান নিজেদের কয়েকটি গান।

এবারের কনসার্টে তরুণ ব্যান্ড ‘কার্নিভাল’কে নিয়ে শ্রোতাদের আলাদা আগ্রহ ছিলো। দ্বিতীয় পারফর্মার হিসেবে তারা মঞ্চ মাতিয়েছেন। গেয়েছেন ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘আমার সত্য’, ‘ভ্রম’, ‘সেইসব দিনরাত্রি’ গানগুলো।

এ প্রজন্মের অন্যতম সেরা ব্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ‘মেঘদল’। প্রথমবারের মতো তারা ‘জয় বাংলা কনসার্ট’-এ পারফর্ম করেছে। শিবু কুমার শীল-মেজবাউর রহমান সুমনেরা তাদের পরিবেশনা শুরু করেন বিখ্যাত গান ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’ দিয়ে। এরপর নিজেদের শ্রোতাপ্রিয় গানগুলো গেয়ে শোনান। এর মধ্যে ছিলো ‘এসো আমার শহরে’, ‘চার চার চৌকো জানালায়’, ‘নির্বাণ’, ‘এ হাওয়া’ ইত্যাদি।

তাদের পর মঞ্চে ওঠে ‘অ্যাভয়েড রাফা’। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিবেদিত গান ‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’ দিয়ে তারা পরিবেশনা শুরু করেন। এরপর নিজেদের কয়েকটি শ্রোতাপ্রিয় গান পারফর্ম করেন।

দর্শক গ্যালারি মাতাতে বরাবরই পটু ব্যান্ড ‘লালন’। ব্যতিক্রম ঘটেনি এবারও। মঞ্চে উঠে প্রথমেই গেয়ে শোনান ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’। এরপর ‘সময় গেলে সাধন হবে না’, ‘এক চোখেতে হাসন কান্দে’, ‘রুহানি’, ‘ভবের পাগল’ গানগুলোয় মাতিয়ে রাখেন তরুণদের।

‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’ গান দিয়ে ঝাঁজালো পারফর্মেন্স শুরু করে ব্যান্ড ‘ক্রিপটিক ফেইট’। সাকিব চৌধুরীর শক্তিশালী কণ্ঠের সঙ্গে চিৎকার করে গলা মেলায় দর্শক-শ্রোতারা। একে একে ব্যান্ডটি তাদের ‘ভোরের অপেক্ষা’, ‘রাতের শেষ’, ‘রং’, ‘প্রতিবাদ’, ‘ভবঘুরে’ ও ‘আক্রমণ’ গানগুলো পরিবেশন করে।

তরুণদের প্রিয় ব্যান্ড ‘নেমেসিস’ মঞ্চে উঠেই কণ্ঠে ধরে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের আরেক গান ‘মাগো ভাবনা কেন’। এরপর তারা নিজেদের ‘জানালা’, ‘কোনও দিন’, ‘বীর’, ‘অবচেতন’, ‘গণজোয়ার’ ও ‘কবে’ গানগুলোয় শ্রোতাদের মাতিয়েছেন।

ততক্ষণে রাতের অন্ধকার নেমে গেছে শহরে। নিভিয়ে দেওয়া হয় কনসার্ট মঞ্চের আলোও। সেই অন্ধকারেই কনসার্টে ওঠে সম্প্রতি দুই দশক পেরোনো জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘চিরকুট’। তাদের পরিবেশনা শুরু হয় ‘বিচ্ছুরণের আলোয় যখন দ্বিগুণ হারে জ্বলছো’ গান দিয়ে। এরপর একে একে শারমিন সুলতানা সুমীর কণ্ঠে বেরিয়ে আসে ‘জাদুর শহর’, ‘দুনিয়া’, ‘কানামাছি’র মতো নন্দিত গানগুলো।

সবশেষ চমক হিসেবে ‘জয় বাংলা কনসার্ট’ মাতিয়েছে মেটাল ব্যান্ড ‘আর্টসেল’। ‘কাণ্ডারি হুঁশিয়ার’ গান দিয়ে শুরু হয় তাদের পাওয়ারফুল পারফর্মেন্স। এরপর আরও কিছু গানে শ্রোতাদের উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসিয়ে বিদায় নেন লিংকন ও তার দল।

এবারের কনসার্টে দর্শক আসনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। ‘ক্রিপটিক ফেইট’র পরিবেশনার সময় তিনি স্টেডিয়ামে হাজির হন এবং ভিআইপি গ্যালারিতে বসে উপভোগ করেন তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ভরা পরিবেশনাগুলো। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি।
এই বিভাগের আরও খবর
ব্যাংককে একান্তে সময় কাটাতে গিয়ে ক্যামেরাবন্দি রাফসান-জেফার

ব্যাংককে একান্তে সময় কাটাতে গিয়ে ক্যামেরাবন্দি রাফসান-জেফার

যুগান্তর
এ আর রহমানের বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তিন সন্তান

এ আর রহমানের বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তিন সন্তান

কালের কণ্ঠ
সহকর্মীদের নিয়ে ‘দরদ’ দেখবেন শাকিব

সহকর্মীদের নিয়ে ‘দরদ’ দেখবেন শাকিব

বাংলা ট্রিবিউন
নারী চরিত্রনির্ভর সিনেমা এখন আর চলে না: বিদ্যা

নারী চরিত্রনির্ভর সিনেমা এখন আর চলে না: বিদ্যা

যুগান্তর
মেহজাবীনের সিনেমা এবার এশিয়ার প্রাচীনতম উৎসবে

মেহজাবীনের সিনেমা এবার এশিয়ার প্রাচীনতম উৎসবে

কালের কণ্ঠ
শাকিবের ‘দরদ’ প্রথম দিন কেমন গেল

শাকিবের ‘দরদ’ প্রথম দিন কেমন গেল

প্রথমআলো
ট্রেন্ডিং
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে 'বস্তায় বস্তায় ঘুষ' নেওয়ার অভিযোগ: দুদকের অনুসন্ধান শুরু

  • ভালোবাসা দিবসে পরী মনির ‘বুকিং’

  • নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত ২৮

  • ভিসা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে নিলো যে দেশ

  • শন্তিপূর্ণভাবে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি: প্রধানমন্ত্রী

  • ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়বে তিন গুণ

  • তানজানিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৯

  • ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকলে বেশি কর

  • কাতার বিশ্বকাপে ফিরছে জিদানের সেই ভাস্কর্য

  • ইন্দোনেশিয়ার নিষেধাজ্ঞায় তেলের মূল্য আকাশছোঁয়া