দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে তুরস্ক। ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় দিক থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির দৃঢ় বন্ধন রয়েছে। সামনের দিনগুলোয় সম্পর্কের এ দৃঢ়তাকে আরো জোরদার করতে চায় তুরস্ক। এজন্য দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক ও খাতভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিনিময়সহ নানামুখী উদ্যোগে আগ্রহ রয়েছে দেশটির।
বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান গতকাল বণিক বার্তা কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির সংবাদকর্মীদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন। বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকার তুর্কি দূতাবাসের প্রেস কাউন্সিলর গিজেম আইদিন এরদেম। সভায় বণিক বার্তার বিভিন্ন বিভাগের সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।
সভায় বাংলাদেশে তুরস্কের ব্র্যান্ড পুনঃপ্রতিষ্ঠার আগ্রহের কথা উল্লেখ করে মুস্তাফা ওসমান তুরান বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্ক দুই দেশই এখন বর্তমান বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতি। ঐতিহ্যগত ও বন্ধুত্বপূর্ণ ইতিহাসকে কাজে লাগিয়ে আমরা সম্পর্কটিকে নতুন উচ্চতায় নিতে চাই। এজন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানো। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে আমরা বিপুল পরিমাণ পাট আমদানি করছি। সামনের দিনগুলোয় আমরা ওষুধসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যও আমদানি করতে পারি। এছাড়া জাহাজ নির্মাণ, এগ্রো ইন্ডাস্ট্রি, ওষুধসহ বিভিন্ন খাতে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে পারি। বাংলাদেশের উদীয়মান খাতগুলো আমাদের বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স এবং জ্বালানি খাতে তুরস্কের দুটি কোম্পানি বিনিয়োগও করেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে চীনের অবস্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বৈশ্বিক ভূরাজনীতিতে চীন বড় খেলোয়াড়। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বর্তমানে চীনকে অন্য কোনো দেশের উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। আর সব ক্ষেত্রে তাদের প্রতিযোগিতা চলছে মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলেও দেশ দুটির প্রভাব লক্ষণীয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভারসাম্যপূর্ণ বৈদেশিক নীতিকে আমরা খুবই প্রশংসার সঙ্গে দেখছি। ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’—এ বৈদেশিক নীতির প্রয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে সব পক্ষ থেকেই সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ। এখানে তুরস্কের কোনো গোপন এজেন্ডা নেই এবং আমরা বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য বন্ধু দেশ। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধু হিসেবেই থাকতে চাই। আমরা কোনো ব্লকের প্রতিনিধিত্ব করি না। বাংলাদেশের কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপও চাই না। এর বাইরে বাংলাদেশ ও তুরস্কের অবস্থান কোনোভাবেই তৃতীয় কোনো দেশের বিরুদ্ধে যাবে না।
এ সময় বাংলাদেশে সমরাস্ত্র সরবরাহের আগ্রহের কথাও জানান তুরস্কের রাষ্ট্রদূত। মুস্তাফা ওসমান তুরান বলেন, গত এক-দেড় দশকে তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তুরস্ক এখন নিজ চাহিদার ৭০ শতাংশ সমরাস্ত্র নিজেই তৈরি করছে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতেও আমরা খুব বিশ্বস্ত সমরাস্ত্র সরবরাহকারী হতে পারি।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনায় তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়টিতে তুরস্ক শুরু থেকেই বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছে। তুরস্ক নিজেও এখন অনেক শরণার্থীর আশ্রয়স্থল। সে জায়গা থেকে আমরা চাই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা হোক। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার জন্য আমাদের কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থা, জরুরি সহায়তা সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কক্সবাজারে কাজ করছে।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়