সকাল সব সময় দিনের সঠিক পূর্বাভাস দেয় না তাহলে!
একে একে নিলামে নাম ওঠা ভারতের জাতীয় দলের সব পেসারই বিক্রি হয়ে যাচ্ছিলেন কোনো না কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে। দীপক চাহার, হার্শাল প্যাটেল আর প্রসিধ কৃষ্ণদের দাম তো চোখ কপালেই তুলে দিল! এর মধ্যেও কয়েকজন টিভি সেটের সামনে অপেক্ষা করছিলেন দুরু দুরু বুকে। আদৌ কোনো দল পান কি না, তা নিয়ে কাজ করছিল সংশয়, অনিশ্চয়তা।
সে দলে উমেশ যাদবও ছিলেন। প্রথম দফায় নিলামে নাম ওঠা এ পেসারের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি কেউ। দ্বিতীয় দফায়ও একই অবস্থা, ফিরলেন খালি হাতে। ভাগ্যের শিকে ছিঁড়ল শেষ দফায় এসে। দুই কোটি টাকা দামের এ পেসারকে ভিত্তিমূল্যেই কিনে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। গতকাল আইপিএলের প্রথম ম্যাচে প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে এ উমেশের হাতেই মূল স্ট্রাইক বোলারের দায়িত্ব তুলে দেয় কলকাতা। প্রথম ম্যাচেই ম্যাচসেরা হয়ে উমেশ আরেকবার চেনালেন নিজেকে।
পারফর্ম করার পাহাড়সম চাপ মাথার ওপরে ছিল। প্রথম বলটাই ‘নো’ করলেন উমেশ। ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে আইপিএলের মৌসুমসূচক ডেলিভারি ‘নো’ করার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডে উঠে গেল তাঁর নাম। ততক্ষণে সরব হয়ে উঠেছেন নিন্দুকেরা। অন্য কোনো ভারতীয় পেসারকে না কিনে উমেশের পেছনে টাকা ঢালার পর যাঁরা এ পেসারের সামর্থ্য নিয়ে ক্রমশ প্রশ্ন তুলে যাচ্ছিলেন।
কিন্তু ওই যে, সকাল সব সময় দিনের সঠিক পূর্বাভাস দেয় না! পরে এই বোলার কী তাণ্ডব চালাবেন, উমেশের প্রথম নো বলটাও সে পূর্বাভাস দেয়নি। তৃতীয় বলেই আউট করলেন চেন্নাইয়ের ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে তুলনামূলক শান্তই ছিলেন, তৃতীয় ওভারে আবারও তুলে নিলেন আরেক ওপেনারের উইকেট, এবারের শিকার চেন্নাইয়ের নতুন কিউই ব্যাটসম্যান ডেভন কনওয়ে। ম্যাচ শেষে উমেশের বোলিং ফিগার দাঁড়াল ৪-০-২০-২। কলকাতার তিন পেসারের মধ্যে উমেশই রান দিলেন সবচেয়ে কম।
ম্যাচ শেষে সেরার পুরস্কারের পাশাপাশি ম্যাচের সেরা পাওয়ার প্লেয়ার, ম্যাচের সবচেয়ে দ্রুতগতির ডেলিভারি ও সবচেয়ে দামি সম্পদের (মোস্ট ভ্যালুয়েবল অ্যাসেট) পুরস্কারটাও নিজের করে নিয়েছেন উমেশ। আইপিএল ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ৯ বার ম্যাচসেরা হলেন উমেশ, যা পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রথম বল দেখে যাঁরা উপসংহারে পৌঁছে গিয়েছিলেন, নিজের সামর্থ্যের জানান তাঁদের বেশ ভালো করেই দিয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী এ পেসার।
ইনিংসের শুরুতে পাওয়ার প্লের ওভারগুলোয় উমেশ যে কত কার্যকর, সেটাও বুঝিয়েছেন গতকাল। যেটা নজরে এসেছে সাবেক পেসার ইরফান পাঠানেরও। ম্যাচ শেষে মুগ্ধ ইরফান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘কী দুর্দান্তই না ছিলেন উমেশ যাদব! খুবই ভালো নতুন বলের বোলারও, যাঁর সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি।’
ইতিহাসের চতুর্থ বোলার হিসেবে আইপিএলের মৌসুমসূচক ম্যাচের প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়েছেন এ পেসার। এর আগে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ব্রেট লি, ডেকান চার্জার্সের চামিন্দা ভাস, কলকাতার ইকবাল আবদুল্লাহর ছিল এ রেকর্ড। পরে কলকাতার হয়ে দুর্দান্ত বল করেছেন সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তীরাও। ব্যাট হাতে নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করেছেন অজিঙ্কা রাহানে, নিতিশ রানারা। এ কারণে প্রথম ম্যাচে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে দলটি। কিন্তু জয়ের পথ তো শুরুতে উমেশই দেখিয়েছেন!
ম্যাচসেরার পুরস্কার নেওয়ার সময় বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের প্রশ্নের জবাবে চওড়া হাসি দিয়ে উমেশ বলছিলেন, ‘দুই বছর পর এমন কোনো পুরস্কার নেওয়ার জন্য মঞ্চে উঠলাম।’ দুই বছর ধরে সাদা বলের ক্রিকেটে নিজেকে ঘষেমেজে গড়ে তোলার কাজটা যে ভালোমতোই করেছেন, প্রথম ম্যাচই তো তার প্রমাণ!
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়