একটি আইফোন চুরির মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বড় চোরচক্রের সন্ধান পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৫৮টি চোরাই মোবাইল ফোন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে চোর চক্রের আট সদস্যকে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-মনির হোসেন (২৮), মো. মোতাহার হোসেন (৫৫), মো. সুরুজ হোসেন (২২), মো. শাহজালাল (২৩), মো. মেহেদী হাসান (২০), কুমার সানি (২৫), মো. হৃদয় (২৫) ও শামীম ওসমান (১৯)। সোম ও মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে চোরাই মোবাইল ফোন ছাড়াও ১টি ল্যাপটপ ও নগদ ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিবি জানিয়েছে, টিকটক ভিডিওসহ অন্যান্য ভিডিও বানাতে ঢাকার বড় বড় শপিংমলের দোকান থেকেই বিক্রি হচ্ছে চোরাই মোবাইল। অনেক ক্ষেত্রে বিক্রির সময় ক্রেতাকে সিম ব্যবহার না করার শর্ত দেয়া হচ্ছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফোনের আইএমই পরিবর্তন করে ফেলা হচ্ছে। এজন্য চক্রে রয়েছে টেকনিশিয়ান। চুরি হওয়া মোবাইল ফোন তিন হাত ঘুরে বিক্রির জন্য দোকানে পৌঁছায় পাশাপাশি চোরাই মোবাইল ফোন বহুদিন ধরে ভারতে পাচার হচ্ছে। ভারতের চোরাই মোবাইলও আসছে দেশে।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়ে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গত ২৯শে এপ্রিল উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১০নং সেক্টর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের অজুখানা থেকে একজন ব্যক্তির একটি আইফোন চুরি হয়। পরে তিনি একটি মামলা করেন। ডিবি ওই মামলার তদন্তে গিয়ে এ চক্রের সন্ধান পায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মোবাইল চুরিসহ সংঘবদ্ধ চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
ডিবি প্রধান বলেন, বর্তমানে মোবাইল ফোনের চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগে মোবাইল ফোন চুরি-ছিনতাইও বেড়েছে। এ ছাড়াও মোবাইল ফোন চুরির ঘটনায় আসামি গ্রেপ্তার করা হলেও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছেন। এতে করে চোররা কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে একই কাজ করছেন। তবে মোবাইল ফোন চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে জোরালোভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শুধু মোবাইল চোরকে নয় চোরাই মোবাইল বিক্রয়কারীদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। কারণ চোরাই মোবাইল বিক্রির কারণে চোররা অনুপ্রাণিত হয়।
হাফিজ আক্তার বলেন, চুরি বা ছিনতাই করা মোবাইল ফোন সাধারণত তিনটি হাত বদল হয়ে থাকে। প্রথমে চোর বা ছিনতাইকারী ৪ থেকে ৮ হাজার টাকায় পুরাতন মোবাইল ক্রয় করে এমন ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। তারা মোবাইল কিছুটা মেরামত ও আইএমই পরিবর্তন করে বিভিন্ন মোবাইল মার্কেটে বা দোকানে বিক্রি করে দেয়। এরপর তারা ব্যক্তি বা ক্রেতাদের কাছে ১৫-৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। আর যে সমস্ত মোবাইল ফোনে পাসওয়ার্ড লক থাকে সেগুলোর পার্টসগুলো আলাদা বিক্রি করে টেকনিশিয়ানরা। এই তিন হাত বদলের ক্ষেত্রে পুরো চক্রটি বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করে।
তিনি বলেন, চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার অভিযান করতে গিয়ে দেখা গেছে বর্তমানে আইফোনের প্রতি বেশি ঝোঁক চোরদের। তারা চোরাই আইফোনের আইএমই নম্বর ফ্লাস দিয়ে পরিবর্তন করে বিক্রি করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মধ্যে মোবাইল ফোন বিক্রেতা, টেকনিশিয়ান, চোর ও ছিনতাইকারীরা রয়েছেন। তবে সর্বশেষ বিক্রি হচ্ছে দোকান থেকেই। মোবাইল ব্যবসায়ী ও বিক্রেতাদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা পুরনো মোবাইল বিক্রি করুন এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু চোরাই মোবাইল কোনোভাবেই বিক্রি বা মজুত করা যাবে না। যদি কারও কাছে চোরাই মোবাইল পাওয়া যায়, তবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেন্ডিং
সর্বাধিক পঠিত
- সাতক্ষীরা জেলার দুজন সাংসদকে মন্ত্রী দাবি
- বড় চমক থাকছে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে
- চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি
- একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে ৩০ জানুয়ারি
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডোর হয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি
- ঘুরে আসুন সাদা পাথরের দেশে
- অ্যাশ-ম্যাশের স্বাগত খুনসুটি
- শেখ হাসিনার যত রেকর্ড
- ঘুরে আসুন সিকিম
- ভোটারদের সঙ্গে সালমানের শুভেচ্ছা বিনিময়